Hesperian Health Guides

ক্যান্সারে র চিকি ৎসা

এই অধ্যায়ে

ক্যান্সার নিরাময় করার চেষ্টা, এবং ব্যক্তিকে ক্যান্সার নিয়ে দীর্ঘ সময় বাস এবং একটু উন্নত মানের জীবন যাপন করতেও সাহায্য উভয়ই করার জন্য ক্যান্সারের চিকিৎসার প্রয়োগ করা হয়।

ক্যান্সারের চিকিৎসার ধরন নির্ভর করবে ব্যক্তিটির কোন ধরনের ক্যান্সার আছে, এটি কি দেহের শুধুমাত্র একটি অংশে বা এটি দেহের অন্যান্য অংশেও ছড়িয়েছে কিনা, বা ব্যক্তিটি কতখানি স্বাস্থ্যবান তার উপর। চিকিৎসার পদ্ধতি হয়তো এককভাবে বা অন্য আর একটি পদ্ধতির সাথে মিলে ব্যবহৃত হতে পারে, বা প্রথম পদ্ধতিটি ভাল কাজ না করলে অন্য আর একটি পদ্ধতি হয়তে ব্যবহার করতে হবে। ক্যান্সারের চার ধরনের চিকিৎসা পদ্ধতি রয়েছে।

  1. অস্ত্রোপচার — ক্যান্সারের কোষগুলোকে দেহ থেকে অপসারণ করা হয়।
  2. কেমোথেরাপী — ক্যান্সারের কোষগুলোকে মেরে ফেলতে ঔষধের ব্যবহার করে।
  3. বিকিরণ — ক্যান্সারের কোষগুলোকে মেরে ফেলতে উচ্চ শক্তির রশ্মি ব্যবহার করে।
  4. হরমোন থেরাপী — ক্যান্সারের অবস্থার আরও অবনতি করে এমন হরমোন উৎপাদন বন্ধ করতে ঔষধ ব্যবহার করে।


চিকিৎসার কিছু অস্বাচ্ছন্দ্যনীয় পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকলেও এগুলো প্রায়শই ব্যক্তিকে ভাল হয়ে ওঠার সুযোগ দিতে ক্যান্সার ধ্বংস করার একমাত্র উপায়।

কোন কোন পদ্ধতি অন্যান্য পদ্ধতির থেকে বেশী ব্যয়বহুল, কোন কোনটি সব জায়গায় পাওয়াও যায় না। তাই দুর্ভাগ্যবশতঃ অসমতাও চিকিৎসার ধরন নির্ধারণ করে।

ক্যান্সার ঠিক যেমন মানুষকে ভিন্ন ভিন্ন ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে, ক্যান্সারের চিকিৎসাও ঠিক তেমনিভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে। উদাহরণস্বরূপ, কোন কোন ব্যক্তির ক্ষেত্রে খারাপ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায় আবার অন্যান্যরা চিকিৎসাকে ভালভাবেই সহ্য করতে পারে। বা একই চিকিৎসা হয়তো একজন ব্যক্তির ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াই করতে কার্যকর হতে পারে কিন্তু অন্য কারো ক্ষেত্রে হয়তো তা এতো ভাল কাজ নাও করতে পারে। চিকিৎসা মানুষের অনুভূতি ও মানসিক স্বাস্থ্যকেও ভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে।

উপশম

যখন ক্যান্সারের চিকিৎসা সফল হয় তখন ক্যান্সার আর দেহে থাকে না। নিরাময়-এর পরিবর্তে ‘উপশম’ কথাটি ব্যবহার করা হয়, কারণ পরে আবার ক্যান্সার ফিরে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। একজন ব্যক্তি আংশিক উপশম অবস্থায় থাকতে পারে যখন চিকিৎসা ক্যান্সারটির বৃদ্ধি পাওয়া থামিয়ে দেয়, কিন্তু টিউমারটি তখনও রয়ে গেছে।

ক্যান্সারের চিকিৎসার পর আপনার নিয়মিত পরীক্ষা করা প্রয়োজন। কতদিন পর পর তা নির্ভর করবে ক্যান্সারের ধরনের উপর।

গালের উপর পট্টি লাগানো একজন লোক।

অস্ত্রোপচার

যখন ক্যান্সার দেহের শুধু একটি অংশে পাওয়া যায়, তবে হয়ত অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে এটিকে সফলভাবে অপসারণ করা সম্ভব। মাঝে মাঝে ছোট ছোট ক্যান্সারগুলোকে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে কেটে ফেলা যায়। অন্যান্য ক্যান্সারের ক্ষেত্রে অস্ত্রোপচারের জন্য হাসপাতালে থাকার প্রয়োজন হয় এবং ব্যক্তিটির সম্পূর্ণ সেরে ওঠার জন্য আরও বেশী সময় প্রয়োজন।

কখনও কখনও অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে অপসরণ করা যায়নি এমন রয়ে যাওয়া যে কোন ক্যান্সার মেরে ফেলার জন্য অস্ত্রোপচারের সাথে কেমো থেরাপী বা বিকিরণ মিলিতভাবে ব্যবহার করা হয়।

কেমোথেরাপী

কোন কোন ক্যান্সার ঔষধ দ্বারাই চিকিৎসা করা যায়। এটিকে বলা হয় কেমোথেরাপী। কেমোথেরাপীর ঔষধ প্রায়শই উচ্চমূলের হয় যদিও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অনেক ঔষধই আরও বেশী সামর্থের মধ্যে এসেছে। জাতীয় স্বাস্থ্য কার্যক্রমগুলোর উচিত এই ঔষধগুলোকে আরও সহজলভ্য করে তোলা যাতে আরও বেশী করে মানুষ চিকিৎসা গ্রহণ করে ক্যান্সারমুক্ত হয়ে বেঁচে থাকতে পারে।

কেমো থেরাপী ব্যবহার করা যায়:

  • ক্যান্সার দেহের অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে যাওয়া বন্ধ করতে।
  • ক্যান্সারের বৃদ্ধি ধীর করতে বা ক্যান্সারকে ছোট হয়ে যেতে।
  • ক্যান্সারকে ধ্বংস করতে।
একজন নারী ধমণীতে ঔষধ গ্রহণ করছে আর একটি বাচ্চা কোলে নিয়ে একজন পূরুষ তাকিয়ে আছ।

কোন কোন সময় কেমোথেরাপীই একমাত্র চিকিৎসা যা প্রয়োগ করা প্রয়োজন, কিন্তু প্রায়শই এটি অন্য আর একটি চিকিৎসার পদ্ধতির সাথে মিলিতভাবে ব্যবহার করা হয়। উদাহরণস্বরূপ, অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে অপসরণ সহজ করতে একটি টিউমারকে ছোট করতে কেমোথেরাপী ব্যবহার করা যেতে পারে। বা এটিকে হয়তো অস্ত্রোপচার বা বিকিরণের পরে রয়ে যাওয়া ক্যান্সার মেরে ফেলার জন্য ব্যবহার করা হতে পারে।

কেমোথেরাপীর ঔষধ বিভিন্ন আকারে পাওয়া যায়। এগুলো হয়তো মুখে খাওয়ার বড়ি বা তরল আকারে আসে। বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই, কেমোথেরাপীর ঔষধ ধমনীতে প্রবেশ করানো হয়। একটির বেশী কেমোথেরাপীর ঔষধ ব্যবহার করাও সাধারণ প্রচলন।

কত দিন পর পর কেমো থেরাপী প্রয়োজন, এবং কত দিনের জন্য তা নির্ভর করে ক্যান্সারের ধরন ও কেমোথেরাপীর ঔষধের উপর। চিকিৎসার প্রতি আপনার দেহ কী প্রতিক্রিয়া করে তার উপরও এটি নির্ভর করে যা ব্যক্তি বিশেষে ভিন্ন হতে পারে। কেমোথেরাপী প্রতিদিন, সাপ্তাহিক, বা মাসিক হারে দেয়া যেতে পারে, কিন্তু সাধারণতঃ চিকিৎসা চক্রের অন্তর্বর্তী সময়ে দেহকে বিশ্রাম দেয়া ও সেরে ওঠার জন্য সুযোগ দেয়া হয়।

কেমোথেরাপী ক্যান্সার ধ্বংস করার জন্য ভাল, কিন্তু এগুলো স্বাস্থ্যবান কোষগুলোকেও ক্ষতিগ্রস্ত করে। স্বাস্থ্যকর কোষগুলো সাধারণতঃ সেরে ওঠে, কিন্তু কেমোথেরাপী দেহের প্রতি অনেক কঠোর হতে পারে। কেমোথেরাপী অস্বাচ্ছন্দ্যকর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করতে পারে:

  • বমি বমি ভাব (বমি বমি ভাব দূর করা দেখুন ।)
  • নাক এবং মুখের ভিতরে নিশপিশ করা। মুখ ও গলা হয়তো লাল হয়ে যেতে পারে, ঘা হতে পারে, এবং কোন কোন সময় পুড়ে যাওয়ার ব্যথা হতে পারে। ব্যক্তির আস্বাদন অনুভূতি পরিবর্তন হতে পারে, এবং খাদ্যের স্বাদ হয়তো ধাতবের মতো লাগতে পারে বা অতিরিক্ত তিতা বা মিষ্টি লাগতে পারে। মুখের ঘা হ্রাস করতে প্রতিদিন ১ কাপ নিরাপদ বা ঠাণ্ডা করে উষ্ণ করা হয়েছে এমন ফুটানো জল, ১/৪ চাচামচ বেক করার সোডা, ১/৮ চা চামচ লবনের মিশ্রণ ব্যবহার করে দিনে বেশ কয়েকবার আপনার মুখ কুলকুচি করুন।
  • ক্লান্তি। আপনার যখন প্রয়োজন তখন বিশ্রাম নিন। প্রতিদিন ১৫ মিনিট করে হাঁটলে হয়তো আপনার বল শক্তি আরও বেশী বৃদ্ধি পাবে। প্রচুর পরিমাণে জল বা অন্যান্য তরল পদার্থ পান করলে সাহায্য হবে।
  • চুল পড়ে যাওয়া। কেমোথেরাপী ক্যান্সার এবং চুলের কোষসহ অন্যান্য দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়া কোষগুলোকে মেরে ফেলে। চিকিৎসা শেষে চুল আবার গজাবে।

চিকিৎসার কয়েকদিন পর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয়তো আর খারাপ আকার ধারণ করবে, কিন্তু যত সময় গড়াবে ততই সেগুলো ভাল হতে থাকবে।

কেমোথেরাপী চিকিৎসার সময়ে নিজের যত্ন নিন:

  • যখন প্রয়োজন তখন বিশ্রাম করুন।
  • স্বাস্থ্যকর খাবার খান
  • এ্যালকোহল এড়িয়ে চলুন, যা কেমোথেরাপীর ঔষধ এবং আপনার যকৃতের ক্ষতি করতে পারে।

বিকিরণ (তেজষ্ক্রিয়থেরাপী)

কেমোথেরাপীর মতোই বিকিরণ ক্যান্সারের কোষ এবং অন্যান্য দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়া কোষগুলোকে মেরে ফেলে। ক্যান্সার অপসারণ করার জন্য বা ক্যান্সারের বৃদ্ধি মন্থর করার জন্য ব্যবহার করা হতে পারে। বিকিরণ হয়তো এককভাবে ব্যবহার করা হতে পারে বা অস্ত্রোপচার বা কেমোথেরাপীর সাথে যৌথভাবে ব্যবহার করা যেতে পারে।

বিকিরণের যন্ত্রগুলো উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন রশ্মি প্রেরণ করে। ক্যান্সার যদি দেহের অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে যাবার আগে প্রাথমিক পর্যায়েই সনাক্ত হয় তবে বিকিরণ হয়তো একটি ভাল চিকিৎসা হতে পারে। এর কারণ বিকিরণ একটি নির্দিষ্ট জায়গাকে লক্ষ্য করে প্রেরণ করা হয় ফলে তা সারা দেহের কোন ক্ষতি করে না, যেমনটি কেমোথেরাপীতে হয়। বিকিরণের চিকিৎসা হয়তো দেহ থেকে অস্থায়ী বা স্থায়ীভাবে ক্যান্সার অপসারণ করতে পারে।

একজন নারী একটি বিকিরণ চিকিৎসা যন্ত্রে চিকিৎসা নিচ্ছে


বিকিরণের চিকিৎসা বেদনাদায়ক নয়। আপনি বিরিকণ যন্ত্রের নীচে একটি চিকিৎসা টেবিলে ১৫ থেকে ৩০ মিনিটের জন্য শুয়ে থাকবেন। কতবার চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে এবং কতদিন পর পর তা নিতে হবে তা ক্যান্সারের ধরন এবং টিউমারের আকারের উপর নির্ভর করবে।

বিকিরণের সাধারণ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

  • ক্লান্তি। যখন প্রয়োজন তখন আপনার বিশ্রাম নিন। প্রতিদিন ১৫ মিনিট করে হাঁটা আপনাকে হয়তো আরও বলশক্তি দেবে। প্রচুর পরিমাণে জল বা অন্যান্য তরল জিনিস পান করলে সাহায্য হতে পারে।
  • ক্ষুধামন্দা। অল্প কয়েকবার বেশী পরিমাণে খাওয়ার থেকে বেশ কয়েকবার অল্প অল্প করে খাওয়া হয়তো সহজতর হবে।
  • ত্বকের পরিবর্তন। যে জায়গাতে চিকিৎসা করা হয়ে সে জায়গার ত্বক হয়তে গোলাপী বা গাঢ় রংয়ের হয়ে উঠতে পারে। ওখানে হয়তো ব্যথা শুরু হতে পারে, পুড়ে যাওয়া, শুকনো বা চুলকানির অনুভূতি হতে পারে, সামান্য ফুলে যাতে পারে, বা ফুসকুড়ি বা ফোসকা দেখা দিতে পারে।
  • বমি বমি ভাব (বমি বমি ভাব কমাতে সাহায্য করা দেখুন)।)


সময় গেলে এই চিহ্নগুলো চলে যাবে।

বিকিরণ চিকিৎসার সময় আপনার নিজের যত্ন নিন:

হরমোন থেরাপী

Woman holding her head and looking sick.

যে সমস্ত ঔষধ আপনার দেহের হরমোনকে প্রভাবিত করতে পারে সেগুলো একটি টিউমারকে ছোট হতে বা এর বৃদ্ধির গতি ধীর করতে পারে। এটিকে বলা হয় হরমোন থেরাপী। এই ঔষধগুলো সাধারণতঃ বড়ি আকারে পাওয়া যায়. কিন্তু কোন কোনটি প্রবিষ্ট করা হয়। হরমোন থেরাপী ক্যান্সারের এক বা একাধিক অন্যান্য সাধারণ চিকিৎসা: অস্ত্রোপচার, কেমোথেরাপী, বা বিকিরণের সাথে যৌথভাবে ব্যবহার করা হয়।

হরমোন থেরাপীর সম্ভাব্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া:

  • ক্লান্তি
  • ওজন বেড়ে যাওয়া
  • স্মৃতির সমস্যা
  • মেজাজে পরিবর্তন বা বিষণ্নতা
  • হঠাৎ করেই খুব গরম অনুভব হয়, এবং ঘাম ঝরে
  • যৌনসঙ্গম করার আগ্রহ হারায়


বমি বমি ভাব কমাতে সাহায্য করা

বমি বমি ভাব কেমো থেরাপী বা বিকিরণ চিকিৎসার একটি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে। আপনাকে খারাপ অনুভব করানো ছাড়াও বমি বমি ভাব যদি আপনাকে খাওয়া থেকে বিরত রাখে তবে আপনি যথেষ্ট পরিমাণে পুষ্টি পাবেন না। আপনার ক্লিনিকে হয়তো বমি বমি ভাব কমানোর ঔষধ থাকতেও পারে। কোন কোন ব্যক্তির বেশ কয়েকটি ঔষধ পরীক্ষামূলক ব্যবহার করার পর যেটি তাদের ক্ষেত্রে সবথেকে ভাল কাজ করে সেটি ব্যবহার করতে হতে পারে। এছাড়াও চিকিৎসার দিনগুলোতে এবং সপ্তাহগুলোতে বমি বমি ভার কমাতে ও ভাল অনুভব করতে অন্যান্য এই উপায়গুলো ব্যবহার করার চেষ্টা করুন।

  • আপনার পেটকে শান্ত রাখতে কুড়মুড়ে বিষ্কুট, শুকনো পাউরুটি, শুকনো হাতরুটি, বা অন্যান্য শস্যদানা জাতীয় খাবার খান। যে খাবার খেলে আপনি খারাপ অনুভব করেন বিশেষভাবে তেলে ভাজা বা ঝাল-মশলাযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন।
  • ২ বা ৩ বার বেশী পরিমাণে না খেয়ে অল্প অল্প পরিমাণে অনেকবার খাবার খান, এবং প্রায়ই অল্প অল্প করে তরল পদার্থ চুমুক দিয়ে খান। সারা দিনে সাধারণের থেকে বেশী পরিমাণে জল পান করলে সাহায্য হবে।
  • খাওয়া শেষ করার পর ততক্ষনাৎ না শুয়ে কিছুক্ষণ বসে থাকুন।
NWTND Can Page 8-1.png
  • বমি বমি ভাব থেকে মুক্ত হবার জন্য আকুপ্রেসার ব্যবহার করুন। কব্জির তিন আঙ্গুল উপরে হাতের ভিতরের দিকে ২টি রগের মধ্যের জায়াগায় চাপ দিয়ে ছোট চক্রাকারে আপনার আঙ্গুল ঘুরান। দৃঢ়ভাবে চাপ দিন কিন্তু এতো বেশী না যাতে আপনার ব্যথা লাগে। আকুপ্রেসারে যদি কাজ হয় তবে কয়েক মিনিটের মধ্যেই আপনি ভাল অনুভব করাতে শুরু করবেন।
Woman drinks hot liquid in cup.
  • পুদিনা বা আদা চা পান করুন। পুদিনা চা তৈরী করতে এক কাপ ফুটন্ত জলে এক চা-চামচ পুদিন পাতা মিশান। এটি পান করার আগে এটিকে কিছুক্ষণ স্থিরভাবে রেখে দিন। আদা চা তৈরী করতে থেঁতলানো বা পাতলা করে কাটা আদা জলের মধ্যে দিয়ে কমপক্ষে ১৫ মিনিট ফুটান।
  • যে সমস্ত জায়গায় গাঁজাসেবন বৈধ সেখানে কিছু কিছু ব্যক্তি বমি বমি ভাব কমাতে বা ক্ষুধা বৃদ্ধির জন্য তা ব্যবহার করে থাকে।


চিকিৎসার দিনগুলোতে চিকিৎসা শুরুর আগে কোন কোন ব্যক্তি হালকা নাস্তা করে থাকে। অন্যান্যরা চিকিৎসা শুরুর ঠিক আগে বা পরে খাওয়া বা পান করা তাদের বমি করার ইচ্ছা বাড়ায় বলে তা তারা এড়িয়ে চলে। চিকিৎসার সময় যদি বমি বমি ভাব দেখা দেয় তবে এক টুকরো টাটকা আদা চিবিয়ে দেখুন। চিকিৎসার পর কমপক্ষে ১ঘন্টা অপেক্ষা করে তারপর কিছু খান বা পান করুন।

ক্যান্সারের অন্যান্য চিকিৎসা

ক্যান্সার নিরাময় করতে বা ক্যান্সারের প্রভাবকে প্রশমিত করায় সাহায্য করতে মানুষ অন্যান্য অনেক পদ্ধতি ব্যবহার করে। এগুলোর মধ্যে আছে আধ্যাত্মিক নিরাময়, সম্মোহন, ধ্যান, ভেষজ চিকিৎসা, বিশেষ ভোজনপ্রণালী, অনুশীলন, আকুপাঙ্কচার, এবং মালিশ। এই সব পদ্ধতি প্রায়শই কেমোথেরাপী বা বিকিরণ চিকিৎসা গ্রহণকারী ব্যক্তিদের সাহায্য করে কারণ এগুলো দেহকে দ্রুত সেরে উঠতে সাহায্য করে এবং ক্যান্সার বা ক্যান্সারের চিকিৎসার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলোকে কমাতে সাহায্য করে। কোন পদ্ধতি একত্রে ভাল যাবে সে বিষয়ে একজন স্বাস্থ্যকর্মীর সাথে কথা বলুন। এই পদ্ধতিগুলো আরও হয়তো ক্যান্সার আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে সচারাচর দেখতে পাওয়া উদ্বেগ বা বিষণ্নতা কমাতে সাহায্য করবে, যাতে এগুলো আপনাকে আরও ভাল অনুভব করতে সাহায্য করবে। এবং ক্যান্সারের কারণে মারা যাচ্ছে, চিকিৎসা গ্রহণের চেষ্টা করছে না, বা অন্যান্য চিকিৎসা নিতে চেষ্টা করছে না এমন ব্যক্তিদেরকে এগুলো আরও বেশী স্বাচ্ছন্দ বোধ করতে সাহায্য করবে। শুধুমাত্র এই পদ্ধতিগুলো এককভাবে ব্যবহার করে ক্যান্সার ভাল হবার কোন প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

দুর্ভাগ্যজনক, যে ডাক্তারসহ আরও অনেক লোক আছে যারা ক্যান্সার আক্রান্ত ব্যক্তির আশা বা হতাশার সুযোগ নিয়ে দাবী করে যে তাদের কাছে ক্যান্সার ভাল করার বিশেষ বা গোপন চিকিৎসা আছে। দুঃখজনকভাবে, এই মিথ্যা প্রতিশ্রুতির কারণে মানুষ প্রচুর টাকা নষ্ট করে বা তাদেরকে সাহায্য করতে পারতো এমন চিকিৎসা গ্রহণে দেরী করায়।


এই পাতাটি হালনাগাদ করা হয়েছে: ২৩ এপ্রিল ২০২৪