Hesperian Health Guides

ম্যালেরিয়ার জন্য ব্যবহৃত আরও ঔষধ

ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গু, এবং মশা থেকে অন্যান্য অসুস্থ্যতা: ঔষধ

পরিচ্ছেদসমূহ

ক্লোরোকুইন


পৃথিবীর বেশীরভাগ জায়গাতেই ম্যালেরিয়া ক্লোরোকুইন প্রতিরোধী হয়ে উঠেছে। আপনার এলাকায় কোন ঔষধটি ভাল কাজ করে তা জানুন। একজন ব্যক্তির কোন ধরনের ম্যালেরিয়া হয়েছে তা যদি আপনি না জানেন তবে আর্টেমিসিনিন সংমিশ্রণ চিকিৎসা (এসিটি) দ্বারা চিকিৎসা করাই সবথেকে ভাল।

ক্লোরোকুইন দ্বারা ম্যালেরিয়ার চিকিৎসা করা হলে, ম্যালেরিয়া আবারও ফিরে আসা রোধ করতে আপনার প্রিমাকুইনওপ্রয়োজন হবে।

খুব অল্প কয়েকটি দেশে যেখানে ম্যালেরিয়া এটির প্রতিরোধী হয়ে ওঠেনি সেখানে ক্লোরোকুইন এককভাবেই ম্যালেরিয়া রোধে ব্যবহার করা হয়। ম্যালেরিয়ার এ ঔষধে প্রতিরোধী হওয়ার হার কম এমন দেশগুলোতে ম্যালেরিয়া রোধ করতে কখনও কখনও প্রোগুয়ানিলের সাথে সংমিশ্রণ করে ক্লোরোকুইন ব্যবহার করা হয়।

ম্যালেরিয়া প্রতিরোধ ও এর চিকিৎসা উভয় ক্ষেত্রেই ক্লোরোকুইন গর্ভবতী নারী বা বুকের দুধ পান করানো নারীদের জন্য নিরাপদ।

পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াGreen-effects-nwtnd.png

মাথা ঘুরানো, গা গুলানো, বমি, তলপেটে ব্যথা, চুলকানীর সৃষ্টি করতে পারে।

গুরুত্বপূর্ণNBgrnimportant.png

মাত্রা যদি খুব বেশী হয়ে যায় তবে ক্লোরোকুইন খুবই বিপজ্জনক বিশেষ করে শিশুদের জন্য।

ব্যক্তিটির যদি মৃগী রোগ থাকে তবে এটি ব্যবহার করবেন না।

ব্যক্তিটির ডায়াবেটিস থাকলে সাবধানতার সাথে ব্যবহার করুন।

কিভাবে ব্যবহার করতে হয়NBgrnpill.png

খাবারের সাথে গ্রহণ করুন।

ক্লোরোকুইন দু'টি আকারে পাওয়া যায়, ক্লোরোকুইন ফসফেট এবং ক্লোরোকুইন সালফেট। ক্লোরোকুইনের সক্রিয় অংশটিকে ভিত্তি বলা হয়।

দেহের ওজন সাপেক্ষে মাত্রা। ৩ দিন ধরে দেয়া ক্লোরোকুইনের পূর্ণ ভিত্তি হলো ২৫ মিগ্রা/কেজি নিম্নানুসারে:  

NWTND bag arrow.png
১ম দিন: প্রতি কেজিতে ১০ মিগ্রা ক্লোরোকুইন ভিত্তি
২য় দিন: প্রতি কেজিতে ১০ মিগ্রা ক্লোরোকুইন ভিত্তি
৩য় দিন : প্রতি কেজিতে ৫ মিগ্রা ক্লোরোকুইন ভিত্তি


ক্লোরোকুইন ফসফেট বড়ি সাধারণতঃ ২৫০ মিগ্রা বড়ি (১৫০ মিগ্রা ক্লোরোকুইন ভিত্তিসহ) আকারে পাওয়া যায়।

ক্লোরোকুইন সালফেট বড়ি সাধারণতঃ ২০০ মিগ্রার বড়ি (১৫৫ মিগ্রা ক্লোরোকুইন ভিত্তিসহ) আকারে পাওয়া যায়।

আপনার কোন ধরনের ক্লোরোকুইন আছে এবং এর ভিতরে ক্লোরোকুইনের ভিত্তি কতখানি আছে (বড়ির শক্তিমত্তা) তা জানা নিশ্চিত করুন।

ক্লোরোকুইন প্রতিরোধী নয় এমন জটিলতাহীন ম্যালেরিয়ার চিকিৎসায়

ক্লোরোকুইন ফসফেট ২৫০ মিগ্রা (১৫০ মিগ্রা ক্লোরোকুইন ভিত্তি) বা ক্লোরোকুইন সালফেট ২০০ মিগ্রা (১৫৫ মিগ্রা ক্লোরোকুইন ভিত্তি) বড়ি ব্যবহার করলে:

NWTND bag arrow.png
১ম দিনে এবং আবারও ২য় দিনে ১টি মাত্রা দিন:
৮ কেজির নীচে: ১/২টি বড়ি
৮ কেজি থেকে ১৫ কেজি: ১টি বড়ি
১৬ কেজি থেকে ৩০ কেজি: ২টি বড়ি
৩১ কেজি থেকে ৪৫ কেজি: ৩টি বড়ি
৪৬ কেজি এবং তার বেশী: ৪টি বড়ি


NWTND bag arrow.png
৩য় দিনে ১ম দিনের মাত্রার অর্ধেক দিন:
৮ কেজির নীচে: ১/৪টি বড়ি
৮ কেজি থেকে ১৫ কেজি: ১/২টি বড়ি
১৬ কেজি থেকে ৩০ কেজি: ১ বড়ি
৩১ কেজি থেকে ৪৫ কেজি: ১১/২টি বড়ি
৪৬ কেজি এবং তার বেশী: ২ বড়ি

ক্লোরোকুইন প্রতিরোধী নয় এমন জায়গায় ভাইভাক্স ম্যালেরিয়া রোধ করা

ম্যালেরিয়া রোধ করতে ভ্রমণ করার ১ বা ২ সপ্তাহ আগে প্রতি সপ্তাহে ১ বার ক্লোরোকুইন নিন। আপনি সেখানে থাকাকালীন এবং ম্যালেরিয়া অঞ্চল ত্যাগ করার পর ৮ সপ্তাহ পর্যন্ত প্রতি সপ্তাহে একটি মাত্রা গ্রহণ করা অব্যাহত রাখুন। উপরে দেখানো ৩য় দিনের চিকিৎসায় ব্যবহার করা মাত্রা প্রয়োগ করুন। উদাহরণস্বরূপ, ম্যালেরিয়া প্রতিরোধের জন্য একজন প্রাপ্তবয়স্ক হয় ১৫০ মিগ্রা ক্লোরোকুইন ভিত্তিযুক্ত ক্লোরোকুইন ফসফেটের ২টি বড়ি বা ১৫৫ মিগ্রা ক্লোরোকুইন ভিত্তিসহ ক্লোরোকুইন সালফেটের ২ বড়ি সেবন করবে।

যেখানে ফ্যালসিপেরাম ম্যালেরিয়ার ক্লোরোকুইন প্রতিরোধী হবার হার কম

যে সমস্ত দেশে ম্যালেরিয়া কিছুটা ক্লোরোকুইন প্রতিরোধী কিন্তু ঔষধটি এখনও কাজ করে সেখানে ভ্রমণকারীদের জন্য ক্লোরোকুইন সপ্তাহে একবার দেয়া হয় এবং ম্যালেরিয়া রোধ করতে দিনে একটি করে প্রোগুয়ানিল দেয়া হয়। উভয় ঔষধই ভ্রমণের ১সপ্তাহ আগে থেকে শুরু করুন। সেখানে থাকাকালীন এবং ম্যালেরিয়া অঞ্চল ত্যাগ করার ৪ সপ্তাহ পর পর্যন্ত প্রতি সপ্তাহে একটি মাত্রা গ্রহণ করা অব্যহত রাখুন। ক্লোরোকুইন প্রতি সপ্তাহে একই দিনে এবং প্রোগুয়ানিল প্রতিদিন একই সময়ে গ্রহণ করুন। খাবারের সাথে এগুলো গ্রহণ করুন।

NWTND bag arrow.png
হয় ১৫৫ মিগ্রা বা ১৫০ মিগ্রা ক্লোরোকুইন ভিত্তিযুক্ত ক্লোরোকুইন বড়ি এবং ১০০ মিগ্রা প্রোগুয়ানিল হাইড্রোক্লোরাইডযুক্ত প্রোগুয়ানিল বড়ি ব্যবহার করলে:
১ থেকে ৪ বছর: ১/২টি প্রোগুয়ানিল বড়ি প্রতিদিন এবং ১/২টি ক্লোরোকুইন বড়ি প্রতি সপ্তাহে দিন
৫ থেকে ৮ বছর: ১টি প্রোগুয়ানিল বড়ি প্রতিদিন এবং ১টি ক্লোরোকুইন বড়ি প্রতি সপ্তাহে দিন
৯ থেকে ১৪ বছর: ১১/২টি প্রোগুয়ানিল বড়ি প্রতিদিন এবং ১১/২টি ক্লোরোকুইন বড়ি প্রতি সপ্তাহে দিন
১৫ বছর এবং তার বেশী: ২টি প্রোগুয়ানিল বড়ি প্রতিদিন এবং ২টি ক্লোরোকুইন বড়ি প্রতি সপ্তাহে দিন

প্রিমাকুইন


ফ্যালসিপেরাম নয় এমন ধরনের ম্যালেরিয়ার জ্বর ফেরত আসা রোধ করতে ক্লোরোকুইন-এর সাথে ১৪ দিন পর্যন্ত বা ক্লোরোকুইন দ্বারা চিকিৎসার ঠিক পর পরই প্রিমাকুইন ব্যবহার করুন।

কোন কোন অঞ্চলে ফ্যালসিপেরাম ম্যালেরিয়ার ক্ষেত্রে ৩-দিনের এসিটি চিকিৎসার প্রথম দিনে প্রিমাকুইন-এর একটি একক মাত্রা প্রদান করা হয়। এর ফলে ফ্যালসিপেরাম অন্যান্যদের মধ্যে ছড়ানো বন্ধ করা যায়।

গুরুত্বপূর্ণNBgrnimportant.png

গর্ভবতী নারী বা ৬ মাস বা তার থেকে ছোট শিশুদের বুকের দুধ খাওয়ায় এমন নারীদের প্রিমাকুইন দেয়া হয় না।

প্রিমাকুইন সাধারণতঃ ১বছরের কম বয়সী শিশুদেরকে দেয়া হয় না।

যে সমস্ত ব্যক্তিদের জি৬পিডি ঘাটতি (ফ্যভিজম) নামে রক্তের একটি সমস্যা রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে একজন অভিজ্ঞ স্বাস্থ্যকর্মী বেশ কয়েক সপ্তাহে ছড়িয়ে দিয়ে প্রিমাকুইন-এর একটি নীচু মাত্রা ব্যবহার করতে পারে।

পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াGreen-effects-nwtnd.png

পেট খারাপ এবং পেটে ব্যথা।

কিভাবে ব্যবহার করতে হয়NBgrnpill.png

খাবারের সাথে গ্রহণ করুন

প্রিমাকুইন সাধারণতঃ প্রিমাকুইন ফসফেট আকারেই বেশি পাওয়া যায়। প্রায়শই একটি বড়িতে বিদ্যমান থাকে ১৫ মিগ্রা প্রিমাকুইন ভিত্তি, যা ঔষধটির সক্রিয় অংশ।

ফ্যালসিপেরাম নয় এমন ম্যালেরিয়া একই ব্যক্তির মধ্যে ফেরত আসা রোধ করতে ক্লোরোকুইন-এর সাথে বা ক্লোরোকুইন দ্বারা চিকিৎসার ঠিক পর পরই এটি ব্যবহার করুন

ওজন অনুযায়ী মাত্রা বা আপনি শিশুটির ওজন নিতে না পারলে বয়স অনুযায়ী মাত্রা।

NWTND bag arrow.png
১৫ মিগ্রা প্রিমাকুইন ভিত্তির বড়ি ব্যবহার করলে:
১০ কেজি থেকে ২৪ কেজি (৩ থেকে ৭ বছর): ১/৪টি বড়ি প্রতিদিন ১৪ দিনের জন্য দিন
২৫ কেজি থেকে ৪৯ কেজি (৮ থেকে ১১ বছর): ১/২টি বড়ি প্রতিদিন ১৪ দিনের জন্য দিন
৫০ কেজি এবং তার বেশী (১২ বছর এবং তার বড়): ১টি বড়ি প্রতিদিন ১৪ দিনের জন্য দিন

ফ্যালসিপেরাম যেখানে সচারচর দেখা যায় না সেখানে ফ্যালসিপেরাম ম্যালেরিয়া ছড়ানো রোধ করা

কোন কোন অঞ্চলে এসিটি চিকিৎসার সাথে প্রিমাকুইন-এর একটি একক মাত্রা যোগ করে ম্যালেরিয়া ছড়ানো রোধ করার পরামর্শ দেয়া হয়।

NWTND bag arrow.png
৩দিনের এসিটি চিকিৎসার প্রথম দিনে এবং ১৫ মিগ্রা প্রিমাকুইন ভিত্তির বড়ি ব্যবহার করলে:
১০ কেজি থেকে ২৪ কেজি (৩ থেকে ৭ বছর): ১/৪টি বড়ি একবার দিন
২৫ কেজি থেকে ৪৯ কেজি (৮ থেকে ১১ বছর): ১/২টি বড়ি একবার দিন
৫০ কেজি এবং তার বেশী (১২ বছর এবং তার বড়): ১টি বড়ি একবার দিন

প্রোগুয়ানিল এবং এটোভাকোন + প্রোগুয়ানিল


প্রোগুয়ানিল সাধারণতঃ ভ্রমণকারীদের ম্যালেরিয়া রোধে ব্যবহার করা হয়। প্রোগুয়ানিল সবসময় অন্য আর একটি ম্যালেরিয়ার ঔষধের সাথে ব্যবহার করা হয়।

পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াGreen-effects-nwtnd.png

মাথাব্যথা, কাশি, ডাইরিয়া, এবং মৃদু পেট খারাপের সৃষ্ট করতে পারে।

গুরুত্বপূর্ণNBgrnimportant.png

সঙ্কটজনক বৃক্কের সমস্যাযুক্ত ব্যক্তিদের প্রোগুয়ানিল ব্যবহার করা উচিত নয়।

কিভাবে ব্যবহার করতে হয়NBgrnpill.png

খাবারের সাথে গ্রহণ করুন।

যে সমস্ত এলাকায় ক্লোরোকুইন প্রতিরোধ ক্ষমতা কম সেখানে ম্যালেরিয়া রোধ করতে প্রোগুয়ানিল এবং ক্লোরোকুইন একত্রেব্যবহার করা হয়।

এ্যটোভাকোন এবং প্রোগুয়ানিল একটি নির্দিষ্ট মাত্রার মিশ্র বড়ি আকারে আসে। যে সমস্ত দেশে এসিটি এবং অন্যান্য ম্যালেরিয়ার ঔষধ কাজ করে না সেখানে ম্যালেরিয়া রোধে বেশীরভাগ সময় এটি ব্যবহার করা হয়, এটি কখনও কখনও আর্টেস্যনেট এবং প্রিমাকুইন-এর সংমিশ্রণে ম্যালেরিয়ার চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয়।

বড়িতে আছে:
৬২.৫ মিগ্রা এ্যটোভাকোন + ২৫ মিগ্রা প্রোগুয়ানিল (শিশুদের জন্য)
২৫০ মিগ্রা এ্যটোভাকোন + ১০০ মিগ্রা প্রোগুয়ানিল (প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য)

ম্যালেরিয়া রোধে

ভ্রমণ করার ১ বা ২ দিন আগে প্রাপ্তবয়স্ক এবং শিশু উভয়ের ক্ষেত্রে প্রতিদিন একটি করে মাত্রা নিন। আপনার সেখানে থাকাকালীন এবং ম্যালেরিয়া অঞ্চল ত্যাগ করার ৭ দিন পর পর্যন্ত প্রতিদিন একটি মাত্রা গ্রহণ করুন।

NWTND bag arrow.png
শিশুদের জন্য তৈরী করা ৬২.৫ মিগ্রা এ্যটোভাকোন + ২৫ মিগ্রা প্রোগুয়ানিল বড়ি ব্যবহার করলে:
৫ কেজি থেকে ৭ কেজি: ১/২টি বড়ি প্রতিদিন দিন
৮ কেজি থেকে ৯ কেজি: ৩/৪টি বড়ি প্রতিদিন দিন
১০ থেকে ১৯ কেজি: ১টি বড়ি প্রতিদিন দিন
২০ কেজি থেকে ২৯ কেজি: ২টি বড়ি প্রতিদিন দিন
৩০ কেজি থেকে ৩৯ কেজি: ৩টি বড়ি প্রতিদিন দিন
৪০ কেজি এবং তার বেশী: ৪টি শিশুদের বড়ি বা ১ প্রাপ্তবয়স্ক বড়ি প্রতিদিন দিন।

কুইনাইন, ইঞ্জেকশান


গুরুতর ম্যালেরিয়া একটি চিকিৎসাগত জরুরী অবস্থা। চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানোর আগে কখনও কখনও একজন ব্যক্তির পেশীতে কুইনাইন ইঞ্জেকশান দেয়া হতে পারে। শুধুমাত্র একজন অভিজ্ঞতাসম্পন্ন স্বাস্থ্য কর্মীরই কুইনাইন ইঞ্জেকশান দেয়া উচিত যে এর সঠিক মাত্রা জানে এবং কিভাবে তা দিতে হয় তা জানে। গুরুতর ম্যালেরিয়াযুক্ত শিশুদের ক্ষেত্রে যদি ইঞ্জেকশানযোগ্য আর্টেস্যনেট পাওয়া না যায়, তবে চিকিৎসা গ্রহণের পথে কুইনাইনের বদলে আর্টেস্যনেট ডুশ ব্যবহার করুন।

কুইনাইন সালফেট বড়ি


জটিলতাহীন ম্যালেরিয়ার চিকিৎসা করতে যেখানে ক্লোরোকুইন কোন কাজ করে না সেখানে কুইনাইন বড়ি মুখে খাওয়ানো হয়।

গর্ভাবস্থার প্রথম ৩ মাসে নারীদের ক্ষেত্রে ফ্যালসিপেরাম ম্যালেরিয়ার চিকিৎসা করতে কুইনাইন এবং ক্লিণ্ডামাইসিন উভয়ই ব্যবহার করুন। ক্লোরোকুইন প্রতিরোধী ভাইভাক্স ম্যালেরিয়ার ক্ষেত্রে শুধুমাত্র কুইনাইন ব্যবহার করুন।

গুরুতর ম্যালেরিয়ার জরুরী পরিচর্যার পর ব্যক্তির চিকিৎসা শেষ করার জন্য এসিটি না পাওয়া গেলে কুইনাইন ও হয় ক্লিণ্ডামাইসিন নয়তো ডক্সিসাইক্লিন যৌথভাবে ব্যবহার করা হয় ।

ম্যালেরিয়া রোধে কুইনাইন ব্যবহার করা হয় না।

পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াGreen-effects-nwtnd.png

কুইনাইনের কারণে মাঝে মাঝে ত্বক ঘেমে ওঠে, কানে ঘন্টা বাজে বা শোনায় সমস্যা, ঝাপসা দৃষ্টি, মাথা ঘুরানো, বমি বমি ভাব ও বমি হওয়া, ও ডাইরিয়া দেখা দেয়।

একজন ব্যক্তি যদি কুইনাইন বমি করে ফেলে, তবে একটি বমি বমি ভাব দুর হবার ঔষধ যেমন প্রোমেথাজিন হয়তো সাহায্য করতে পারে।

গুরুত্বপূর্ণNBgrnimportant.png

অতিরিক্ত কুইনাইন নেয়া বিপজ্জনক। কুইনাইনের কারণে রক্তে চিনির মাত্রা অতিরিক্ত কমে যেতে পারে। মাথা ঘুরানো, বিভ্রান্তি, জ্ঞান হারানো, বা হৃদস্পন্দন খুব দ্রুত বা খুব ধীরে হতে থাকার মতো বিপদ চিহ্ন দেখা দিলে চিকিৎসা সহায়তা গ্রহণ করুন।

ক্লোরোকুইন বা মেফ্লোকুইন নিতে থাকলে কুইনাইন ব্যবহার করবেন না।

কিভাবে ব্যবহার করতে হয়NBgrnpill.png

অঞ্চলের উপর নির্ভর করে কুইনাইন দ্বারা ৩ বা ৭ দিন চিকিৎসা করুন। ক্লিণ্ডামাইসিন বা ডক্সিসাইক্লিন হয়তো প্রয়োজন হতে পারে।

কুইনাইন সালফেট, এবং কুইনাইন হাইড্রোক্লোরাইড, কুইনাইন ডিহাইড্রোক্লোরাইড ৩০০ মিগ্রার বড়ি আকারে আসে এবং এদের মাত্রা একই। দেহের ওজন অনুযায়ী, মাত্রাটি হলো ১০ মিগ্রা কুইনাইন সালফেট প্রতি কেজিতে দিনে ৩ বার। কুইনাইন বাইসালফেট বড়ির অবশ্য মাত্রা ভিন্ন: ১৪ মিগ্রা প্রতি কেজিতে দিনে ৩ বার।

জটিলতাহীন ক্লোরোকুইন-প্রতিরোধী ফ্যালসিপেরাম ম্যালেরিয়ার চিকিৎসা করায়

আপনি কোথায় বাস করছেন তার উপর নির্ভর করে, ৩ বা ৭ দিনের চিকিৎসা হবে।

দেহের ওজন সাপেক্ষে মাত্রা।

NWTND bag arrow.png
কুইনাইন সালফেট, কুইনাইন হাইড্রোক্লোরাইড, এবং কুইনাইন ডিহাইড্রোক্লোরাইড-এর ৩০০ মিগ্রার বড়ি ব্যবহার করলে:
৭ থেকে ১১ কেজি: ১/৪টি বড়ি, দিনে ৩বার দিন
১২ থেকে ২৪ কেজি: ১/২টি বড়ি, দিনে ৩বার দিন
২৫ থেকে ৩৪ কেজি: ১টি বড়ি, দিনে ৩বার দিন
৩৫ থেকে ৪৯ কেজি: ১১/২টি বড়ি, দিনে ৩বার দিন
৫০ কেজি এবং তার বেশী: ২টি বড়ি, দিনে ৩বার দিন


কুইনাইন শুরু করার পর ২ বা ৩ দিন পর যখন ব্যক্তিটির ঔষধগুলো বমি করে ফেলে দেয়ার সম্ভাবনা কম তখন ৭ দিনের জন্য ক্লিণ্ডামাইসিন বা ডক্সিসাইক্লিনও ব্যবহার করুন। ডক্সিসাইক্লিন-এর মাত্রার জন্য, নীচে দেখুন।

ক্লিণ্ডামাইসিন-এর ক্ষেত্রে: এর মাত্রা হলো ৭ দিনের জন্য প্রতিদিন দিন প্রতি কেজি দেহের ওজনের জন্য ২০ মিগ্রা, ক্যাপসুলের শক্তি অনুযায়ী ২ টি মাত্রায় ভাগ করে।

NWTND bag arrow.png
ক্লিণ্ডামাইসিন ১৫০ মিগ্রার ক্যাপসুল ব্যবহার করলে:
১০ থেকে ১৯ কেজি: ১টি ক্যাপসুল (১৫০ মিগ্রা), দিনে ২ বার ৭ দিনের জন্য দিন
২০ থেকে ২৯ কেজি: ২টি ক্যাপসুল (৩০০ মিগ্রা), দিনে ২ বার ৭ দিনের জন্য দিন
৩০ থেকে ৪৪ কেজি: ৩টি ক্যাপসুল (৪৫০ মিগ্রা), দিনে ২ বার ৭ দিনের জন্য দিন
NWTND bag arrow.png
ক্লিণ্ডামাইসিন ৩০০ মিগ্রার ক্যপসুল ব্যবহার করলে:
৪৫ কেজি এবং তার উপর: ২টি ক্যাপসুল (৬০০ মিগ্রা), দিনে ২ বার, ৭ দিনের জন্য দিন


গুরুত্বপূর্ণNBgrnimportant.png

আপনার যদি জলের মতো বা রক্তময় ডাইরিয়া দেখা দেয় তবে ক্লিণ্ডামাইসিন নেয়া ততক্ষণাৎ বন্ধ করে দিন।

যেহেতু এই ঔষধটি বুকের দুধের মাধ্যমে একটি শিশুর মধ্যে প্রবেশ করতে পারে তাই বুকের দুধ খাওয়ানো নারীর ক্ষেত্রে ক্লিণ্ডামাইসিন ব্যবহার করা এড়িয়ে চলুন।

ক্লিণ্ডামাইসিন নেয়ার আগে বা পরে ২ ঘন্টার মধ্যে এ্যান্টাসিড গ্রহণ করবেন না। এগুলো ঔষধটির কার্যক্ষমতা কমিয়ে দেয়।

জটিলতাহীন ক্লোরোকুইন-প্রতিরোধী ভাইভাক্স ম্যালেরিয়ার চিকিৎসা করতে

NWTND bag arrow.png
কুইনাইন সালফেট এবং হয় ক্লিণ্ডামাইসিন বা ডক্সিসাইক্লিন ব্যবহার করুন ঠিক যেমন ক্লোরোকুইন-প্রতিরোধী ফ্যালসিপেরাম ম্যালেরিয়ার ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয় (উপরে দেখুন)। এই চিকিৎসার পর, ১৪ দিনের জন্য প্রিমাকুইন ব্যবহার করুন। কিন্তু গর্ভবতী নারীদের জন্য প্রিমাকুইন ব্যবহার করবেন না।

ডক্সিসাইক্লিন


ডক্সিসাইক্লিন হলো একটি জীবাণুরোধক যার অনেক ব্যবহার আছে। এটি কুইনাইনের সাথে সংমিশ্রণ করে ম্যালেরিয়ার চিকিৎসায় ব্যবহার করা যায়। ডক্সিসাইক্লিন ভ্রমণকারীদের ম্যালেরিয়া রোধেও ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াGreen-effects-nwtnd.png

বুক জ্বলা, পেটে খিঁচুনী, ডাইরিয়া, এবং ঈষ্ট-এর সংক্রামণ প্রায়ই দেখা যায়।

গুরুত্বপূর্ণNBgrnimportant.png

গর্ভবতী নারী ও ৮ বছরের নীচে শিশুদের ডক্সিসাইক্লিন বা ট্ট্রোসাইক্লিন ব্যবহার এড়িয়ে যাওয়া উচিত কারণ এই ঔষধগুলো দাঁত ও হাড়ের ক্ষতি করে বা এতে বিবর্ণতার সৃষ্টি করে।

বৃক্ক, যকৃত, পেটের অসুখ বা পাকস্থলির প্রদাহপূর্ণ রোগাক্রান্ত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে ব্যবহারের সময় সাবধানতা অবলম্বন করুন।

ডক্সিসাইক্লিন নেয়ার আগে ও পরে ২ ঘন্টার মধ্যে আয়রন বড়ি ও এ্যান্টাসিড সেবন করবেন না। এগুলো ঔষধের কার্যকারিতা কমিয়ে দেবে।

ডক্সিসাইক্লিন নিতে থাকাকালীন সূর্যের আলোতে সময় কাটানো এড়িয়ে চলুন যাতে ত্বক রোদে পুড়ে যাওয়া এবং ত্বকে ফুসকুড়ি হওয়া রোধ করা যায়।

ডক্সিসাইক্লিন হয়তো জন্ম নিয়ন্ত্রণ বড়ির কার্যকারিতা কমিয়ে ফেলতে পারে। সম্ভব হলে এই ঔষধটি নেবার সময় অন্য আর একটি জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি (যেমন কনডম) ব্যবহার করুন।

কিভাবে ব্যবহার করতে হয়NBgrnpill.png

এক পেয়ালা পূর্ণ জলের সাথে ডক্সিসাইক্লিন নিন। এতে যদি আপনার পেটে সমস্যা দেখা দেয় তবে এটি খাবারের সঙ্গে নিন।

জটিলতাহীন ক্লোরোকুইন-প্রতিরোধী ম্যালেরিয়ার চিকিৎসা করতে কুইনাইনের সাথে ব্যবহার করুন

NWTND bag arrow.png
জটিলতাহীন ফ্যালসিপেরাম ম্যালেরিয়ার ক্ষেত্রে, কুইনাইন শুরু করার ১ বা ২ দিন পর বা ব্যক্তিটি বমি করা ছাড়া ঔষধ গ্রহণ করতে পারার সাথে সাথে ডক্সিসাইক্লিন সেবন করা শুরু করা যায়।
৮ বছরের বেশী বয়সী কিন্তু ৪০ কেজির কম ওজনের শিশু: ৫০ মিগ্রা, প্রতিদিন দিন ২ বার, ৭ দিনের জন্য
৪০ কেজির বেশী ওজনের শিশু এবং প্রাপ্তবয়স্ক: ১০০ মিগ্রা, প্রতিদিন দিন ২ বার, ৭ দিনের জন্য


এছাড়াও কুইনাইন দিন।

জটিলতাহীন ভাইভাক্স ম্যালেরিয়ার চিকিৎসা করতে কুইনাইনের সাথে ব্যবহার করুন

NWTND bag arrow.png
ডক্সিসাইক্লিন এবং কুইনাইন উপরের মতো করে ব্যবহার করুন, এবং মাত্রা শেষ হয়ে গেলে, ১৪ দিনের জন্য প্রিমাকুইন নিন।

ম্যালেরিয়া বিদ্যমান এলাকায় ভ্রমণের সময় ম্যালেরিয়া রোধ করা:

NWTND bag arrow.png
প্রাপ্ত বয়স্ক ও শিশু উভয়ই ভ্রমণ শুরু করার ১ বা ২ দিন আগে থেকে ডক্সিসাইক্লিন-এর একটি মাত্রা প্রতিদিন নিন। আপনার সেখানে থাকাকালীন এবং ম্যালেরিয়া অঞ্চল ছেড়ে আসার ২৮ দিন পর্যন্ত প্রতিদিন একটি করে মাত্রা নেয়া অব্যহত রাখুন।
৮ বছরের বেশী বয়সী কিন্তু ৪০ কেজির কম ওজনের শিশু: ৫০ মিগ্রা দিনে ১ বার প্রতিদিন দিন
৪০ কেজির বেশী ওজনের শিশু এবং প্রাপ্তবয়স্ক: ১০০ মিগ্রা দিনে ১ বার প্রতিদিন দিন


এই পাতাটি হালনাগাদ করা হয়েছে: ১৯ এপ্রিল ২০২৪