Hesperian Health Guides
ম্যালেরিয়ার ঔষধ
হেসপেরিয়ান স্বাস্থ্যউইকি > নতুন যেখানে ডাক্তার নেই > মশা থেকে সৃষ্ট ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গু, এবং অন্যান্য অসুস্থ্যতা > ম্যালেরিয়ার ঔষধ
পরিচ্ছেদসমূহ
- ১ ম্যালেরিয়ার ঔষধ সম্পর্কে
- ১.১ ম্যালেরিয়া রোধে ব্যবহৃত ঔষধ
- ১.২ গুরুতর ম্যালেরিয়ার চিকিৎসা করতে ঔষধ
- ১.৩ পি. ফ্যালসিপারাম দ্বারা সৃষ্ট জটিলতাহীন ম্যালেরিয়ার চিকিৎসায় ঔষধ
- ১.৪ পি. ফ্যালসিপেরাম থেকে সৃষ্ট না হওয়া জটিলতাহীন ম্যালেরিয়ার চিকিৎসা ব্যবহৃত ঔষধ
- ১.৫ গর্ভবতী নারীদের ম্যালেরিয়ার চিকিৎসায় ব্যবহৃত ঔষধ
- ১.৬ সকল ম্যালেরিয়ার ঔষধ
- ২ আর্টেমিসিনিন-ভিত্তিক মিশ্র চিকিৎসা (এসিটি)
- ৩ আর্টেমেথার + লুমিফানট্রিন
- ৪ আর্টেস্যনেট + এ্যমোডায়াকুইন
- ৫ আর্টেস্যনেট + মেফ্লোকুইন
- ৬ আর্টেস্যনেট এর সাথে সালফাডক্সিন + পাইরিমেথামিন
- ৭ ডিহাইড্রোআর্টেমিসিনিন + পিপারাকুইন
- ৮ আর্টেস্যনেট
ম্যালেরিয়ার ঔষধ সম্পর্কে
ম্যালেরিয়ার চিকিৎসা ও রোধে অনেক ঔষধ রয়েছে। কিন্তু ম্যালেরিয়ার পরজীবি ঔষধগুলোকে প্রতিহত করার ক্ষমতা অর্জন করতে পারে, মানে হলো কোন কোন ঔষধ এই পরজীবিগুলোকে আর মারতে পারে না। আপনার এলাকাতে কোন ঔষধটি ভাল কাজ করে তা স্বাস্থ্য কর্মীরা, স্থানীয় স্বাস্থ্য কেন্দ্র, বা সরকারী স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানে ।
ম্যালেরিয়া রোধে ব্যবহৃত ঔষধ
মেফ্লোকুইন, ক্লোরোকুইন, ক্লোরোকুইন ও প্রোগুয়ানিল, এটোভাকোন + প্রোগুয়ানিল, এবং ডক্সিসাইক্লিন, নামের ঔষধগুলো যখন মানুষ ম্যালেরিয়া নেই এমন জায়গা থেকে ম্যালেরিয়া আছে এমন জায়গায় ভ্রমণ করে তখন ব্যবহার করা হয়।
ম্যালেরিয়া ভাল হয়ে যাবার পর কোন কোন ধরনের ম্যালেরিয়ার পুনরাক্রামণ রোধ করতে প্রিমাকুইন ব্যবহার করা হয়।
আফ্রিকার কোন কোন সাহেল অঞ্চলে ৫ বছরের নীচে শিশুদের মধ্যে ম্যালেরিয়া রোধ করতে বর্ষাকালে সালফাডক্সিন + পাইরিমেথামিন-এর সাথে এমোডায়াকুইন-এর মাসিক মাত্রা ব্যবহার করা হয়।
আফ্রিকার অন্যান্য দেশগুলোতে নবজাতকদের মধ্যে ম্যালেরিয়া রোধ করতে সালফাডিক্সন + পাইরিমেথামিন-এর তিন মাত্রা সাধারণ টীকার দেয়ার ২য় ও ৩য় বারের সময় দেয়া হয়।
গুরুতর ম্যালেরিয়ার চিকিৎসা করতে ঔষধ
গুরুতর ম্যালেরিয়ার ক্ষেত্রে হাসপাতাল বা ক্লিনিকে গিয়ে শিরায় ঔষধ প্রয়োগের মাধ্যমে বা প্রবিষ্টকরণযোগ্য আর্টেস্যনেট-এর মাধ্যমে জরুরী চিকিৎসার প্রয়োজন। ব্যক্তিটির চিকিৎসা একবার হয়ে গেলে এবং তার বমি হওয়া বন্ধ হলে তাদের একটি তিন দিনের আর্টেমিসিনিন-ভিত্তিক যৌগ (এসিটি) ঔষধ মুখে খাওয়ার প্রয়োজন হবে (নীচে দেখুন)।
যদি জরুরী আর্টেস্যনেটে ইঞ্জেকশান পাওয়া না যায় তবে, বমি করছে এমন গুরুতর ম্যালেরিয়াযুক্ত একটি শিশুকে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যাওয়ার পথে আর্টেস্যনেট ক্যাপসুলের ডুশ, (মলদ্বারে) দিন। এটি শিশুটির জীবন বাঁচাতে পারে।
পি. ফ্যালসিপারাম দ্বারা সৃষ্ট জটিলতাহীন ম্যালেরিয়ার চিকিৎসায় ঔষধ
পি ফ্যালসিপারাম পরজীবিটি ম্যালেরিয়ার কারণ ঘটায় যেটি গুরুতর হয়ে যাবার সম্ভাবনা বেশী। অঞ্চলের উপর ভিত্তি করে ক্লোরোকুইন বা অন্যান্য ম্যালেরিয়ার ঔষধ ফ্যালসিপারাম ম্যালেরিয়ার চিকিৎসায় আর কাজ করে না। তার পরিবর্তে এসিটি (আর্টেমিসিনিন ভিত্তিক মিশ্র চিকিৎসা) ঔষধ ব্যবহার করুন। আপনার এলাকায় কাজ করে এমন ঔষধ ব্যবহার করুন। ৩ দিনের জন্য এসিটি ঔষধ নিন। এসিটি ঔষধ ব্যবহার করা দেখুন। সাধারণ এসিটি মিশ্র হলো:
- আর্টেমেথার + লুমিফানট্রিন
- আর্টেস্যনেট + এ্যমোডিয়াকুইন
- আর্টেস্যনেট + মেফ্লোকুইন
- আর্টেস্যনেটের সাথে সালফাডক্সিন + পাইরিমেথামিন
- ডিহাইড্রোআর্টেমিসিনিন + পিপেরাকুইন
পি. ফ্যালসিপেরাম থেকে সৃষ্ট না হওয়া জটিলতাহীন ম্যালেরিয়ার চিকিৎসা ব্যবহৃত ঔষধ
বেশ কয়েকটি ম্যালেরিয়ার পরজীবি জটিলতাহীন ম্যালেরিয়ার সৃষ্টি করে। আপনি যদি ম্যালেরিয়ার ধরন না জানেন বা ব্যক্তিটির একই সাথে ২ ধরনের ম্যালেরিয়া হয় তবে এসিটি (আর্টেমিসিনিন-ভিত্তিক মিশ্র চিকিৎসা) ব্যবহার করুন। আপনি যে এলাকায় বাস করেন সেখানে ম্যালেরিয়া ক্লোরোকুইন প্রতিরোধী হয়ে গেলে তার পরবর্তে কোন এসিটি ভাল কাজ করে তা আপনার জানা প্রয়োজন।
যদি ফ্যালসিপারাম-নয় এমন জটিলতাহীন ম্যালেরিয়ার ক্ষেত্রে ক্লোরোকুইন কাজ করে তবে সেটি হয়তো এসিটি-এর থেকে বেশী সহজলভ্য হবে। ম্যালেরিয়া থেকে বেশী সম্পূর্ণ নিরাময় লাভ করতে ক্লোরোকুইন (পৃষ্ঠা ৩৮) প্রায়শই প্রিমাকুইনের সাথে যৌথভাবে ব্যবহার করা হয়।
গর্ভবতী নারীদের ম্যালেরিয়ার চিকিৎসায় ব্যবহৃত ঔষধ
গুরুতর ম্যালেরিয়ার ক্ষেত্রে গর্ভবতী নারীদের হাসপাতালে বা ক্লিনিকে নিয়ে অন্য যে কোন প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ব্যবহৃত একই ঔষধ দ্বারা জরুরী চিকিৎসা করা যায়।
গর্ভাবস্থার প্রথম ৩ মাসে জটিলতাহীন ম্যালেরিয়ার চিকিৎসা করতে কুইনাইন ও ক্লিণ্ডামাইসিন ব্যবহার করুন। ম্যালেরিয়ার পরীক্ষায় যদি জটিলতাহীন ম্যালেরিয়া ভাইভাক্স পরজীবির কারণে হয়েছে ধরা পড়ে, বা আপনার ক্লিণ্ডামাইসিন না থাকে তবে কুইনাইন ব্যবহার করুন।
৩ মাসের বেশী সময়ের গর্ভাবস্থাযুক্ত একজন নারীর জটিলতাহীন ম্যালেরিয়ার চিকিৎসা করতে এসিটি বা আপনার এলাকায় ভাল কাজ করে এমন অন্যান্য ঔষধ ব্যবহার করুন।
গর্ভাবস্থায় প্রিমাকুইন ব্যবহার করবেন না। কুইনাইন, ক্লোরোকুইন, ক্লিণ্ডামাইসিন, এবং প্রোগুয়ানিল ঔষধগুলো গর্ভকালীন নিরাপদ ঔষধ। কোন কোন অঞ্চলে গর্ভবতী নারীরা তাদের গর্ভবস্থার ১৩তম সপ্তাহ থেকে সালফাডক্সিন + পাইরিমেথামিন নেয়া শুরু করে। গর্ভাবস্থার বাকি সময়টার জন্য প্রতি মাসে একটি মাত্রা গ্রহণ করাকে আন্তকালীন প্রতিরোধক চিকিৎসা বলা হয়। এটি গর্ভের শিশু বা মায়ের কোন ক্ষতি করার আগেই ম্যালেরিয়া রোধ করবে।
সকল ম্যালেরিয়ার ঔষধ
ম্যালেরিয়া বমির সৃষ্টি করতে পারে। আপনি যদি মাত্রাটি সেবন করার ৬০ মিনিটের মধ্যে বমি করে ফেলেন তবে মাত্রাটির পুনরাবৃত্তি করুন।
আপনি ইতোমধ্যেই ভাল অনুভব করলেও পূর্ণ সময়ের জন্য ম্যালেরিয়ার ঔষধ গ্রহণ করুন। ম্যালেরিয়ার সকল পরজীবিকে মেরে ফেলতে এটির প্রয়োজন। চিকিৎসার কারণে যদি বমি হয় বা একটি শিশুকে ঔষধটি খাওয়ানো কঠিন হয় তবে একজন স্বাস্থ্য কর্মীর সাথে কথা বলুন।
ঔষধ দ্বারা চিকিৎসা শুরু করার পরও গুরুতর ম্যালেরিয়ার বিপদ চিহ্নগুলো খেয়াল করুন বিশেষ করে শিশু এবং গর্ভবতী নারী বা সদ্য জন্ম দান করেছে এমন নারী ক্ষেত্রে।
আর্টেমিসিনিন-ভিত্তিক মিশ্র চিকিৎসা (এসিটি)
আর্টেমেথার + লুমিফানট্রিন
আর্টেমেথার এবং লুমিফানট্রিন একটি নির্দিষ্ট মাত্রার মিশ্র বড়ি আকারে আসে বা এগুলোকে একই সময়ে আলাদা আলাদা বড়ি হিসেবে দেয়া হয়।
এটি জটিলতাহীন ফ্যালসিপেরাম ম্যালেরিয়া, অন্যান্য ধরনের ম্যালেরিয়ার চিকিৎসায়, এবং গুরুতর ম্যালেরিয়ার জরুরী চিকিৎসায় শেষ হবার পর পর ব্যবহার করা হয়।
এই এসিটি মিশ্র ঔষধগুলো ম্যালেরিয়া রোধে ব্যবহার করা হয় না।
বমি বমি ভাব, পেট খারাপ, মাথা ঘুরানো, মাথা ব্যথা ঘটাতে পারে।
গর্ভাবস্থার প্রথম ৩ মাসের একজন নারীর জটিলতাহীন ম্যালেরিয়ার চিকিৎসার ক্ষেত্রে যেখানে পাওয়া যায় সেখানে এসিটি সংমিশ্রণের পরিবর্তে কুইনাইন এবং ক্লিণ্ডামাইসিন ব্যবহার করুন।
আপনার যদি হৃদরোগের সমস্যা থাকে, তবে এই ঔষধ নেবার আগে একজন অভিজ্ঞতাসম্পন্ন স্বাস্থ্য কর্মীর সাথে কথা বলুন।
পূর্ণ আহারের সময় বা দুধের সাথে নিন। খাবারে থাকা চর্বি এই ঔষধটি ব্যবহার করায় দেহকে সাহায্য করে।
বড়িতে আছে:জটিলতাহীন ম্যালেরিয়ার চিকিৎসা করতে
দেহের ওজন সাপেক্ষে মাত্রা।
২০ মিগ্রা আর্টেমেথার এবং ১২০ মিগ্রা লুমিফানট্রিন বড়ি ব্যবহার করলে:৫ কেজি থেকে ১৪ কেজি: ১টি বড়ি, ৩ দিনের জন্য দিনে দুই বার দিন
আর্টেস্যনেট + এ্যমোডায়াকুইন
আর্টেস্যনেট এবং এ্যমোডায়াকুইন একটি নির্দিষ্ট মাত্রার মিশ্র বড়ি আকারে আসে বা এগুলোকে একই সময়ে আলাদা আলাদা বড়ি হিসেবে দেয়া হয়।
এটি জটিলতাহীন ফ্যালসিপেরাম ম্যালেরিয়া, অন্যান্য ধরনের ম্যালেরিয়ার চিকিৎসায়, এবং গুরুতর ম্যালেরিয়ার জরুরী চিকিৎসা শেষ হবার পর পর ব্যবহার করা হয়।
এই এসিটি মিশ্র ঔষধগুলো ম্যালেরিয়া রোধে ব্যবহার করা হয় না।
ত্বকে চুলকানি, পেট খারাপ, মাথা ব্যথা, মাথা ঘুরানোর সৃষ্টি করতে পারে।
গর্ভাবস্থার প্রথম ৩ মাসের একজন নারীর জটিলতাহীন ম্যালেরিয়ার চিকিৎসার ক্ষেত্রে যেখানে পাওয়া যায় সেখানে এসিটি সংমিশ্রণের পরিবর্তে কুইনাইন এবং ক্লিণ্ডামাইসিন ব্যবহার করুন।
এইচআইভিযুক্ত ব্যক্তি বা অন্যান্য যারা জিডোভুডিন, এফাভিরেঞ্জ, বা কোট্রিমোক্সাজোল নিচ্ছে তাদের এটি দেয়া এড়িয়ে যান।
১০০ মিগ্রা আর্টেস্যনেট + ২৭০ মিগ্রা এ্যমোডায়াকুইন
জটিলতাহীন ম্যালেরিয়ার চিকিৎসা করতে
দেহের ওজন সাপেক্ষে মাত্রা।
২৫ মিগ্রা আর্টেস্যনেট এবং ৬৭.৫ মিগ্রার এ্যমোডায়াকুইন বড়ি ব্যবহার করে:৪.৫ কেজি থেকে ৮ কেজি: ১টি বড়ি, তিন দিনের জন্য প্রতিদিন দিন
আর্টেস্যনেট + মেফ্লোকুইন
আর্টেস্যনেট এবং মেফ্লোকুইন একটি নির্দিষ্ট মাত্রার মিশ্র বড়ি আকারে আসে বা এগুলোকে একই সময়ে আলাদা আলাদা বড়ি হিসেবে দেয়া হয়।
এটি জটিলতাহীন ফ্যালসিপেরাম ম্যালেরিয়া, অন্যান্য ধরনের ম্যালেরিয়ার চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয়।
ম্যালেরিয়া নেই এমন জায়গা থেকে ম্যালেরিয়া বিদ্যমান এমন এলাকায় আসা ব্যক্তিদের ম্যালেরিয়া রোধে মেফ্লোকুইন এককভাবে ব্যবহার করা।
মাথা ঘুরানো, পেট খারাপ মাথাব্যথা এবং নিদ্রা ও দৃষ্টির সমস্যা হতে পারে যদি ম্যালেরিয়ার চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয়।
আর্টেস্যনেট+ মেফ্লোকুইন ব্যবহারে গর্ভবতী নারীদের আরও বেশী বমি বমি ভাব হতে পারে, তাই পাওয়া গেলে ভিন্ন এসিটি ব্যবহার করুন।
গর্ভাবস্থার প্রথম ৩ মাসের একজন নারীর জটিলতাহীন ম্যালেরিয়ার চিকিৎসার ক্ষেত্রে যেখানে পাওয়া যায় সেখানে এসিটি সংমিশ্রণের পরিবর্তে কুইনাইন এবং ক্লিণ্ডামাইসিন ব্যবহার করুন। ৩ মাসের কম বয়েসী শিশু বা ৫ কেজির নীচে ওজন হওয়া শিশুদের ক্ষেত্রে মেফ্লোকুইন ব্যবহার করবেন না।
মৃগীরোগযুক্ত বা মানসিক অসুস্থতাযুক্ত বা গুরুতর যকৃতের সমস্যাযুক্ত ব্যক্তিদের মেফ্লোকুইন নেয়া উচিত নয়।
আপনার যদি হৃৎপিণ্ডের সমস্যা থাকে তবে এই ঔষধ নেবার আগে একজন অভিজ্ঞতা সম্পন্ন স্বাস্থ্যকর্মীর সাথে কথা বলুন।
মেফ্লোকুইন কোন কোন সময় অদ্ভুত আচরণ, বিভ্রান্তি, দুশ্চিন্তা, খিঁচুনী বা সংজ্ঞাহীনতার কারণ ঘটায়। এই লক্ষণগুলোর কোন একটি দেখা গেলে মেফ্লোকুইন নেয়া ততক্ষণাৎ বন্ধ করুন। মেফ্লোকুইন ব্যবহারে একবার যদি একজন ব্যক্তির ক্ষেত্রে এই প্রতিক্রিয়া দেখা যায় তবে তার আবার ম্যালেরিয়া হলে ভিন্ন চিকিৎসা গ্রহণ করুন।
খাবারের সাথে নিন।
বড়িতে আছে:জটিলতাহীন ম্যালেরিয়ার চিকিৎসা করতে
দেহের ওজন সাপেক্ষে মাত্রা।
২৫ মিগ্রা আর্টেস্যনেট + ৫৫ মিগ্রা মেফ্লোকুইন বড়ি ব্যবহার করলে:
ম্যালেরিয়া রোধে মেফ্লোকুইন:
২৫০ মিগ্রা মেফ্লোকুইন বড়ি আকারে পাওয়া যায়
এই মাত্রাটি ভ্রমণ করার ২ বা ৩ সপ্তাহ আগে থেকে সপ্তাহে একবার করে নিন। আপনি যতদিন সেখানে থাকবেন ততদিন সপ্তাহে একটি করে মাত্রা এবং ম্যালেরিয়া অঞ্চল থেকে চলে আসার ৪ সপ্তাহ পর্যন্ত গ্রহণ করা অব্যাহত রাখুন। ৫ কেজি ওজনের শিশুর ক্ষেত্রে মেফ্লোকুইন ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হয় না।
২৫০ মিগ্রা বড়ি ব্যবহার করলে:আর্টেস্যনেট এর সাথে সালফাডক্সিন + পাইরিমেথামিন
সালফাডক্সিন এবং পাইরিমেথামিন একটি নির্দিষ্ট মাত্রার মিশ্র বড়ি আকারে আসে এবং জটিলতাহীন ফ্যালসিপেরাম ম্যালেরিয়া এবং অন্যান্য ধরনের ম্যালেরিয়ার চিকিৎসায় আর্টেস্যনেট-এর সাথে ব্যবহার করা হয়।
কোন কোন এলাকায় যেখানে এগুলো আর কাজ করে না সেখানে সালফাডক্সিন + পাইরিমেথামিন ব্যবহার করার পরামর্শ আর দেয়া হয় না। ব্যবহার করার আগে আপনার দেশের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে জেনে নিন।
যে সমস্ত দেশে গর্ভবতী নারীদের মধ্যে ম্যালেরিয়া রোধ করতে সালফাডক্সিন + পাইরিমেথামিন বড়ি ব্যবহার করা হয় সেখানে মাসিক মাত্রা ৩ মাসের গর্ভাবস্থা থেকে শুরু করা হয়।
পেট খারাপ ও ত্বকে ফুসকুড়ির সৃষ্টি করতে পারে।
গর্ভাবস্থার প্রথম ৩ মাসের একজন নারীর জটিলতাহীন ম্যালেরিয়ার চিকিৎসার ক্ষেত্রে যেখানে পাওয়া যায় সেখানে এসিটি-এর সংমিশ্রণ-এর পরিবর্তে কুইনাইন এবং ক্লিণ্ডামাইসিন ব্যবহার করুন।
নবজাতকদের জন্য ভিন্ন এসিটি ব্যবহার করুন।
আপনি ইতোমধ্যেই কোট্রিমোক্সাজোল নিতে থাকলে সালফাডক্সিন + পাইরিমেথামিন ব্যবহার করবেন না।
সালফা ঔষধ থেকে কখনো একবার প্রতিক্রিয়া হয়েছে এমন কারও সালফাডক্সিন + পাইরিমেথামিন ব্যবহার করা উচিত নয়। ঔষধটি যদি ফুসকুড়ি বা চুলকানির সৃষ্টি করে তবে প্রচুর পরিমাণে জল পান করুন এবং এই ঔষধটি আর নেবেন না।
সালফাডক্সিন + পাইরিমেথামিন হলো মিশ্র বড়ি এবং এতে থাকা ২টি ঔষধের প্রতিটি বিভিন্ন মাত্রায় পাওয়া যায়।
জটিলতাহীন ম্যালেরিয়ার চিকিৎসা করতে
এই এসিটি নিম্নলিখিতভাবে একটি ৩-দিনের চিকিৎসা: ১ম, ২য়, এবং ৩য় দিনে আর্টেস্যনেট এর মাত্রা দিন। এছাড়াও প্রথম দিনে সালফাডক্সিন + পাইরিমেথামিনের একটি মাত্রা দিন।
দেহের ওজন সাপেক্ষে মাত্রা।
৫০ মিগ্রা আর্টেস্যনেট বড়ি ব্যবহার করলে:
এসিটি মিশ্রণ দ্বারা চিকিৎসা করা হচ্ছে এমন গর্ভবতী নারীদের চিকিৎসার ৩ দিন এবং তার পরবর্তী ২ সপ্তাহ পর্যন্ত ফোলিক এ্যাসিড গ্রহণ বন্ধ করা উচিত। অতিরিক্ত ফোলিক এ্যাসিড ম্যালেরিয়ার ঔষধের কার্যকারিতায় বাধা সৃষ্টি করে।
সালফাডক্সিন + পাইরিমেথামিন গর্ভাবস্থায় ম্যালেরিয়া রোধে ব্যবহার করা হয়
কোন কোন আফ্রিকান দেশে সকল গর্ভবতী নারীদেরকেই সালফাডক্সিন + পাইরিমেথামিন বড়ির মাসিক মাত্রা সেবন করানো হয় কারণ এখানে ম্যালেরিয়া এতো বেশী দেখা যায় যে তা মা এবং গর্ভে বৃদ্ধি পাওয়া শিশুর জন্য তা খবুই বিপজ্জনক। মাসিক মাত্রা শুরু হয় যখন একজন নারী ৩ মাসের গর্ভবতী হয়। মশারী গর্ভবতী থাকা কালীন এবং শিশুর জন্মের পর ম্যালেরিয়া রোধে সাহায্য করে।
৫০০ মিগ্রা সালফাডক্সিন + ২৫ মিগ্রা পাইরিমেথামিন বড়ি ব্যবহার করলে:
গর্ভবতী নারীরা যখন সালফাডক্সিন + পাইরিমেথামিন বড়ি গ্রহণ করে তখন গা গুলানো, বমি, এবং মাথা ঘুরানোর অবস্থা দেখা যেতে পারে, বিশেষ করে প্রথম মাত্রার ক্ষেত্রে। কিন্তু বেশীরভাগ নারীরই মৃদু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা যায় বা একেবারেই কোন প্রতিক্রিয়া দেখা যায় না।
শিশুটিকে ভাল রাখার জন্য এবং রক্তস্বল্পতা রোধ করতে গর্ভবতী নারীদের লৌহ এবং ফোলিক এ্যাসিডও প্রয়োজন। ম্যালেরিয়া রোধে প্রতি মাসে সালফাডক্সিন + পাইরিমেথামিন বড়ি সেবন করলে প্রতিদিন ০.৪ মিগ্রা (৪০০ মাইক্রোগ্রাম) মাত্রায় ফোলিক এ্যাসিড সেবন করুন কিন্তু এর বেশী নয়। অতিরিক্ত ফোলিক এ্যাসিড ম্যালেরিয়ার ঔষধের কার্যকারীতায় বাধা সৃষ্টি করে।
ডিহাইড্রোআর্টেমিসিনিন + পিপারাকুইন
ডিহাইড্রোআর্টেমিসিনিন এবং পিপারাকুইন একটি নির্দিষ্ট মাত্রার মিশ্র বড়ি আকারে আসে।
এটি জটিলতাহীন ফ্যালসিপেরাম ম্যালেরিয়া, অন্যান্য ধরনের ম্যালেরিয়ার চিকিৎসায়, এবং গুরুতর ম্যালেরিয়ার জরুরী চিকিৎসা পরবর্তী সময়ে ব্যবহার করা হয়।
ম্যালেরিয়া রোধে এই এসিটি মিশ্র ঔষধ ম্যালেরিয়া রোধে ব্যবহার করা হয় না।
দ্রুত হ্রদস্পন্দন, পেট খারাপ, চুলাকানির সৃষ্টি করতে পারে।
গর্ভাবস্থার প্রথম ৩ মাসের একজন নারীর জটিলতাহীন ম্যালেরিয়ার চিকিৎসার ক্ষেত্রে যেখানে পাওয়া যায় সেখানে এসিটি-এর সংমিশ্রণ-এর পরিবর্তে কুইনাইন এবং ক্লিণ্ডামাইসিন ব্যবহার করুন।
এরিথ্রোমাইসিন ব্যবহার করার সময় এটি গ্রহণ করবেন না।
৬০ বছরের বেশী বয়স্ক ব্যক্তি, এ্যন্টিরেট্রোভাইরাল ঔষধ গ্রহণ করা এইচআইভিযুক্ত ব্যক্তি, বা হৃৎপিণ্ড, বৃক্ক বা যকৃতের সমস্যাযুক্ত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে এটি ব্যবহারে সাবাধানতা অবলম্বন করুন।
২ আহারের মাঝামাঝি সময়ে পূর্ণ এক পেয়ালা জল পানের মাধ্যমে এটি সেবন করুন। দুধ বা চর্বি জাতীয় খাবারের সাথে এটি গ্রহণ করবেন না কারণ এর ফলে যত ভালভাবে ঔষধটি কাজ করার কথা তাতে পরিবর্তন ঘটবে।
বড়িতে আছে:২৫ কেজির নীচে ওজনযুক্ত শিশু ২.৫ মিগ্রা/কেজি ডিহাইড্রোআর্টেমিসিনিন এবং ২০ মিগ্র/কেজি পিপারাকুইন মাত্রার উপর ভিত্তি করে একটি মাত্রা পেয়ে থাকে। বড় শিশু ও প্রাপ্ত বয়স্কদের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা মাত্রার তুলনায় এই মাত্রাটি প্রতি কেজিতে অনেক বেশী।
জটিলতাহীন ম্যালেরিয়ার চিকিৎসা করতে
দেহের ওজন সাপেক্ষে মাত্রা।
২০ মিগ্রা ডিহাইড্রোআর্টেমিসিনিন + ১৬০ মিগ্রা পিপারাকুইন বড়ি ব্যবহার করলে:
আর্টেস্যনেট
আর্টেস্যনেট আর্টেমিসিনিন পরিবারের একটি ঔষধ। জটিলতাহীন ফ্যালসিপেরাম ম্যালেরিয়ার চিকিৎসায় আর্টেস্যনেট বড়ি আকারে এগুলোর কোন একটির সাথে যৌথভাবে ব্যবহার করা হয়: এ্যমোডায়াকুইন, মেফ্লোকুইন, বা সালফাডক্সিন + পাইরিমেথামিন। এই ঔষধগুলোর সংমিশ্রণ করাকে বলা হয় আর্টেমিসিনিন মিশ্রণ চিকিৎসা (এসিটি) পৃষ্ঠা ৩১ দেখুন।
গুরুতর ম্যালেরিয়ার চিকিৎসার ক্ষেত্রে জরুরী চিকিৎসায় অগ্রসরতম প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত স্বাস্থ্য কর্মীরা শিরার প্রবেশ করার আর্টেস্যনেট (আইভি) বা পেশীতে আর্টেস্যনেট ইঞ্জেকশান (আইএম) ব্যবহার করতে পারে। এই চিকিৎসার কমপক্ষে ২৪ ঘন্টা পর, যখন ব্যক্তিটি আর বমি করছে না তখন তার মুখে খাওয়ার ৩ দিনের আরও একটি এসিটি চিকিৎসা নেয়ার প্রয়োজন হবে।
দুরের কোন হাসপাতালে স্থানান্তর করার আগে প্রাপ্তবয়স্ক ও শিশুদের চিকিৎসার জন্য প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত স্বাস্থ্যকর্মীরাই আর্টেস্যনেট ইঞ্জেকশান ব্যবহার করে থাকে। আর্টেস্যনেট ডুশ আকারেও আসে যা ৬ বছর বয়েসী শিশুদের ক্ষেত্রে ডাক্তারী সহায়তা পাওয়ার পথে গুহ্যদ্বারে প্রবেশ করানো হয়।
ম্যালেরিয়া রোধে আর্টেস্যনেট ব্যবহার করা হয় না।
আর্টেস্যনেট মাথা ঘুরানো, মাথা ব্যথা এবং পেট খারাপের সৃষ্টি করতে পারে।
জটিলতাহীন ফ্যালসিপেরাম ম্যালেরিয়ার ক্ষেত্রে এসিটি-এর অংশ হিসেবে অন্য ঔষধের সাথে ব্যবহার করুন:
আর্টেস্যনেট ৫০ মিগ্রা বড়ি আকারে পাওয়া যায়। এসিটি-এর অংশ হিসেবে যখন ব্যবহার করা হয় তখন আর্টেস্যনেট এবং সালফাডক্সিন + পাইরিমেথামিন বড়ির মাত্রার জন্য উপরে দেখুন। অন্যান্য এসিটি সংমিশ্রণের ক্ষেত্রে, আর্টেস্যনেট অন্য একটি ঔষধের সাথে মিশ্রণ অবস্থায় একটি একক বড়ি আকারে পাওয়া যায় বা ২টি বড়ি আলাদাভাবে একই ফোস্কাযুক্ত মোড়কে পাওয়া যায় যা একসাথে সেবন করতে হয়।
গুরুতর ম্যালেরিয়াযুক্ত শিশুদের জন্য আর্টেস্যনেট ডুশ কিভাবে ব্যবহার করতে হয়:
যদি গুরুতর ম্যালেরিয়ার লক্ষণ দেখা দেয়া ৬ বছর বা তার থেকে কম বয়সী একটি শিশুর বমি হতে থাকে এবং তার চিকিৎসা করতে পারে এমন স্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে সে দুরে অবস্থান করে, তবে সাহায্য পেতে যাওয়ার পথে গুহ্যদ্বারে আর্টেস্যনেটজেলাটিন ক্যাপসুল (ডুশ বলা হয়) প্রবেশ করান। এটি শিশুটির জীবন রক্ষা করতে পারে। ক্যাপসুলটিকে গুহ্যদ্বারে প্রবেশ করানোর পরে শিশুটির পেছন ১০ মিনিটের জন্য ধরে থাকুন যাতে ক্যাপসুলটি বের হয়ে না যায় তা নিশ্চিত করতে পারেন। এটি যদি প্রথম ৩০ মিনিটের মধ্যে বের হয়ে আসে তবে একই মাত্রা আবারও প্রয়োগ করুন।
শিশুটির ওজন যদি ৫ থেকে ১০ কেজি হয়, তবে ১০০ মিগ্রার ডুশ ব্যবহার করুন, এবং যদি তা ১০ কেজি বা তার বেশী হয় তবে ২টি ১০০ মিগ্রার ডুশ ক্যাপসুল ব্যবহার করুন। যদি ৫০ মিগ্রা ডুশ ক্যাপসুল পাওয়া যায় তবে যে শিশুর ৫ কেজির নীচে ওজন তার ক্ষেত্রে মাত্র একটি ক্যাপসুল ব্যবহার করুন।
জরুরী চিকিৎসা ম্যালেরিয়া ভাল করে না। একজন অভিজ্ঞ স্বাস্থ্য কর্মীর দ্বারা শিশুটির আরও চিকিৎসার প্রয়োজন হবে।