Hesperian Health Guides

সাধারণ চোখের সমস্যা

এই অধ্যায়ে

ছানি

চোখের মনি সাদা হয়ে ঢেকে যাওয়া চোখ

লেন্স হলো চোখের মধ্যে একটি স্বচ্ছ অংশ যা বাইরে থেকে আলোকে কেন্দ্রীভূত করে যাতে চোখ দেখতে পায়। মানুষ বৃদ্ধ হতে থাকলে এই লেন্সটি ঘোলা হয়ে যেতে পারে, ও এর ভিতর দিয়ে আলো প্রবেশ করা বন্ধ হয়ে যেতে পারে, এবং এর ফলে ক্রমশ দৃষ্টিহানি হতে পারে এবং পরিশেষে অন্ধত্ব দেখা দিতে পারে। এই ঘোলা হওয়াটিকে চোখের উপর একটি ধূসড় দাগ হিসেবে অনেক সময় দেখা যেতে পারে যাকে ছানি বলা হয়। বৃদ্ধ লোকদের মধ্যেই ছানি সচরাচর দেখা যায়, কিন্তু কোলের শিশু বা বাড়ন্ত শিশুদের মধ্যেও তা দেখা যেতে পারে।

ছানির বৃদ্ধি বিলম্ব করানোর জন্য:

  • ধূমপান করবেন না।
  • দৃঢ় সূর্য্যালোক থেকে চোখকে রক্ষার জন্য টুপি পড়ুন।


 একজন নারী কথা বলছে
আমরা বলছি: “আপনার যদি সাদা চুল থাকে তবে, আপনার চোখ ধূসড় কিনা তা পরীক্ষা করে দেখুন।” আমরা ছানিযুক্ত বয়স্ক লোকদেরকে তাদের দৃষ্টি ফিরে পাবার জন্য অস্ত্রোপচার করার জন্য উৎসাহিত করছি।

স্বাস্থ্য কর্মীরা ছানিযুক্ত ব্যক্তিদের খুঁজে বের করতে পারে এবং তাদেরকে যে সমস্ত কার্যক্রম ও হাসপাতালে দৃষ্টি পুনস্থাপন করতে অস্ত্রোপচার করার সুযোগ রয়েছে সেখানে যাওয়ার সুপারিশ করতে পারে। পুরুষদের তুলনায় নারীরাই ছানির চিকিৎসার ক্ষেত্রে সুযোগ কম পায়। তাই বৃদ্ধা নারীদেরকে তাদের ঘরে গিয়ে তাদের দৃষ্টিশক্তির বিষয়ে জিজ্ঞাসা করুন। ছানির কারণে দৃষ্টিহানি হওয়ার আগেই চিকিৎসা গ্রহণ করায় সাহায্য করতে বয়স্ক ব্যক্তিদের পরীক্ষা করুন। কিন্তু তারা যদি অতি সামান্যও দেখতে পায়, তবুও তাদেরকে সাহায্য পাবার ব্যবস্থা করার এখনই সঠিক সময়।

চিকিৎসা

ঔষধ খাওয়ার মাধ্যমে ছানি দূর হয় না। একটি অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে ছানি (ঘোলা লেন্সটিকে) সরিয়ে ফেলা হয় এবং একটি পরিষ্কার লেন্স সেখানে বসানো হয় যাতে ব্যক্তিটি আবারও দেখতে পায়।

অস্ত্রোপচারের পর, চোখটি সেরে উঠতে ব্যক্তিটির জীবাণুনাশক এবং প্রদাহ-নাশক চোখের ড্রপ নেবার প্রয়োজন হবে, সাধারণতঃ ৪ সপ্তাহের জন্য। চোখে হয়তো সামান্য অস্বস্তি থাকতে পারে এবং প্রথমদিকে হয়তো দৃষ্টি একটু ঘোলা হতে পারে, কিন্তু দিনে দিনে তার উন্নতি হবে। প্রথম দুই সপ্তাহে যদি চোখে ব্যথা হয় তবে এটি একটি বিপদের লক্ষণ। তবে ২৪ঘন্টার মধ্যে একজন চোখের ডাক্তারের সাহায্য নিন। অস্ত্রোপচারের পর কাছের জিনিস পড়ার জন্য হয়তো একটি পড়বার চশমা প্রয়োজন হবে।

গ্লুকোমা

কোন কোন সময়ে চোখের ভিতরে চাপ বৃদ্ধি পায় এবং চোখের ভিতরে স্নায়ুগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে একটি সঙ্কটজনক রোগের সৃষ্টি হয় যাকে গ্লুকোমা বলা হয়। গ্লুকোমা আক্রান্ত ব্যক্তি তার পার্শ্বদৃষ্টি হারায় এবং ক্রমশ অন্ধ হয়ে যেতে পারে। চোখে ব্যথা হতে পারে এবং চোখটি একটি মার্বেলের মতো শক্ত হয়ে যেতে পারে। গ্লুকোমা আঘাত লাগার ফলেও হতে পারে, কিন্তু বেশীরভাগ সময়েই এর কারণ অজানা।

গ্লুকোমাযুক্ত একজন ব্যক্তির চাপ কমানোর জন্য চিকিৎসা প্রয়োজন। এটি হয়তো সারা জীবনের জন্য চোখের ড্রপ গ্রহণ করা হতে পারে, বা কোন কোন সময় লেজার চিকিৎসা হতে পারে বা চাপ কমানোর জন্য অস্ত্রোপচার করা হতে পারে।

গ্লুকোমা বেশীরভাগ সময়েই চল্লিশোর্ধ ব্যক্তিদের ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে, বিশেষ করে যার পরিবারে গ্লুকোমাযুক্ত একজন সদস্য ছিল। প্রতি কয়েক বছর পর পর গ্লুকোমা শনাক্ত করতে চল্লিশোর্ধ ব্যক্তিদের চোখ পরীক্ষা করায় সাহায্য করুন।

বিভিন্ন ধরনের গ্লুকোমা দেখা যায়। বেশীরভার সময় এ্যাকিউট গ্লুকোমা এবং দীর্ঘমেয়দী গ্লুকোমা দেখা যায়।

এ্যাকিউট গ্লুকোমা (কোণ-অবসান গ্লুকোমা)

এটির খুব সহজেই অবনতি হয়। এর ফলে দৃষ্টিহানি হওয়াসহ চোখ লাল ও খুবই বেদনাযুক্ত হয়। ব্যক্তির বমি বমি ভাব দেখা দিতে পারে, মাথা ব্যথা থাকতে পারে, এবং উজ্জ্বল আলোয় তাদের চোখ বেশী ব্যথা করে। চোখটিকে অন্য স্বাভাবিক চোখ থেকে বেশী শক্ত মনে হতে পারে। যদি চিকিৎসা করা না হয় তবে এ্যাকিউট গ্লুকোমা কয়েক দিনের মধ্যে অন্ধত্বের কারণ ঘটাতে পারে। ব্যক্তিটিকে ততক্ষণাৎ চিকিৎসা সহায়তার জন্য পাঠান। তাদের প্রথমেই চোখের চাপ কমানোর জন্য চোখের ড্রপ ব্যবহার করার প্রয়োজন হবে। তারপর তাদের হয়তো লেজার চিকিৎসা বা অস্ত্রোপচার করার প্রয়োজন হবে।

দীর্ঘমেয়াদী গ্লুকোমা (মুক্ত-কোণ গ্লুকোমা)

দীর্ঘমেয়াদী গ্লুকোমায় মাসের পর মাস বছরের পর বছর ধরে দু'চোখেই চাপ বাড়তে থাকে। কোন ব্যথা থাকে না। প্রথমে পাশের দিকের (প্রান্তস্থ) দৃষ্টিহানি হয়। গ্লুকোমার অবস্থার অবনতি হতে থাকলে, মনে হবে যে আপনি একটি সুরঙ্গের মধ্য দিয়ে দেখছেন। দৃষ্টিহানি তীব্র হওয়ার আগ পর্যন্ত ব্যক্তিটি প্রায়শই এটি লক্ষ্য করে না। চোখের ডাক্তার এই ধরনের গ্লুকোমা শনাক্ত করার জন্য পার্শ্বদৃষ্টি পরীক্ষা করতে পারে এবং চোখের ভিতরে দেখতে পারে। যত শীঘ্রই এর চিকিৎসা করা হবে ততই ভাল। চোখের ড্রপ, লেজার, বা অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে চিকিৎসা দৃষ্টির অবনতি হওয়া বন্ধ করতে পারে।

আড়াআড়িভাবে চোখের উপর মাংসল বৃদ্ধি (টেরিজিয়াম)

 এক ফালি মাংস চোখের ভিতর থেকে বেরিয়ে এসেছে চোখের সাদা অংশটি এবং কনীনিকার কিছু অংশ ঢেকে ফেলেছে

নাকের পাশে চোখের সাদা অংশ থেকে ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পেয়ে মাঝ বরাবর পর্যন্ত যাওয়া চোখের উপরিভাগের পুরু হওয়া মাংসখণ্ডকে টেরিজিয়াম বলা হয়। এটি সচরাচর দেখা যায় এবং সাধারণতঃ সঙ্কটজনক নয়। যে সমস্ত লোক অনেক বছর ঘরের বাইরে উজ্জ্বল সূর্যালোকে কাজ করেছে বা প্রচুর বাতাস আর ধূলাযুক্তস্থানে কাটিয়েছে তাদের এটি হবার সম্ভাবনা বেশী।

গাঢ় চশমা এবং টুপি সূর্যালোক, বাতাস, এবং ধূলা থেকে চোখ বাঁচাবে, যা এর বৃদ্ধি পাওয়া রোধ করবে বা বিলম্ব করাবে।

প্রায়শই এগুলোর কোন চিকিৎসার প্রয়োজন নেই। এটি যদি চোখের রঙিন অংশের খুব কাছে থাকে বা খুব বেশী অস্বস্তির সৃষ্টি করে তবে ব্যক্তির দৃষ্টি ক্ষতিগ্রস্ত করা শুরুর আগেই এই বর্দ্ধিত অংশটুকু একজন শল্যচিকিৎসক অপসারণ করতে পারে।

চোখের সাদা অংশটিতে রক্ত

 চোখের সাদা অংশটিতে রক্ত
সাদা অংশে রক্তের ছোপ সাধারণতঃ ক্ষতি করে না।

কোন ভারী কিছু উঠানোর পর, জোরে কাশি দিলে, বা চোখে সামান্য আঘাত লাগলে মাঝেমাঝেই চোখের সাদা অংশে রক্ত দেখা যায়। এটি ছোট রক্তনালী ফেটে যাওয়ার কারণে ঘটে থাকে। একটি কালশিটে দাগ যেমন কোন ক্ষতি করে না, ঠিক তেমন এটিও কোন ক্ষতি করে না, এবং ২ সপ্তাহের মধ্যে নিজে নিজেই চলে যাবে। কোন চিকিৎসার প্রয়োজন নেই।

যদিও, চোখের রঙিন অংশটিতে যদি রক্ত থাকে (কনীনিকায়), তবে তা সঙ্কটজনক।

শুষ্ক চোখ এবং খরখরে চোখের পাতা

শুষ্ক জলবায়ু, বৃদ্ধ হয়ে যাওয়া, বায়ুতে ধূয়া, এবং কোন কোন ঔষধের করণে চোখ শুষ্ক হয়ে যায়।

চোখের পাতা খরখরে হয় যদি ময়লা বা চোখ থেকে নিংসৃত রস আদ্রতা ও অশ্রু বের হওয়া রোধ করে একে শুষ্ক করে ও চুলকানির সৃষ্টি করে। ব্যক্তিটির হয়তো চোখের পাতার সংক্রামণ হতে পারে (নীচে দেখুন) বা চোখের পাতা খরখরে হতে পারে বা এর উপর দিয়ে খুশকির মতো আশ উঠতে পারে। চোখের পাতা এবং চোখের চারপাশে মুখ যদি পরিষ্কার থাকে তবে অশ্রু ও চোখের স্বাভাবিক আদ্রতা এগুলোকে স্বাস্থ্যবান রাখতে পারে।

চিকিৎসা

শুষ্ক চোখের জন্য, আপনার চোখকে বিশ্রাম দেবার জন্য মাঝে মাঝেই বন্ধ রাখুন। আপনার চোখগুলো যদি শুষ্ক থাকে তবে আপনি চোখের স্বাভাবিক আদ্রতা বৃদ্ধি করতে দিনে ১ থেকে ২ বার ৫ থেকে ১০ মিনিটের জন্য গরম ভাপ দেবার চেষ্টা করতে পারেন। পিচ্ছিল চোখের ড্রপও সাহায্য করতে পারে (পৃষ্ঠা ৩২।

খর্খরে চোখের পাতার জন্য, দিনে ২ থেকে ৪ বার গরম ভাপ দিন ও তারপর ধীরে ধীরে চোখের পাতা ধৌত করুন। এতে যদি অবস্থার উন্নতি না হয় তবে হয়তো এটি কোন ব্যাক্টেরিয়াজনিত সংক্রামণ হতে পারে এবং আপনি দিনে ২ বার ৭ দিনের জন্য এরিথ্রোমাইসিন জীবাণুনাশক চোখের মলম ব্যবহার করতে পারেন।

চোখের পাতার উপর গোটা ও ফুলে ওঠা

চোখের পাতার উপর একটি লাল হয়ে ফুলে ওঠা গোটা সাধারণতঃ হয়:

  • একটি আঞ্জনি হবে, যা চোখের পাপড়ির চারপাশের সংক্রামণের কারণে সৃষ্টি হয়েছে; নতুবা
  • একটি তেলাঙ্গি হবে, যা হয়তো চোখের পাতার ভিতরে কিছু আটকে থাকার কারণে সৃষ্টি হওয়া একটি বেদনাহীন গোটা।


কোন কোন সময় একটি পাপড়ির চারপাশে শুরু হওয়া সংক্রামণ চোখের পাতার ভিতরের দিক পর্যন্ত ছড়াতে পারে।

দিনে ৪ বার করে প্রতিবার ১৫ বা ২০ মিনিট গরম সেক দেয়ার মাধ্যমে উভয়েরই চিকিৎসা করা যায়। ব্যবহার করার সময় কাপড়টিকে বেশ কয়েকবার পুনরায় এমনভাবে গরম করুন যাতে এটিকে না পোড়া না লাগিয়ে যতখানি সম্ভব গরম রাখা যায়। এই গোটাটিকে চাপ দেবেন না বা ফুটো করেবেন না তহলে সমস্যাটি আরও খারাপ আকার ধারণ করবে।

ফোলা যদি কয়েক দিনের মধ্যে কমে না যায় তবে চিকিৎসা সহায়তা গ্রহণ করুন।

 নীচের পাতার মাঝামাঝি একটি গোটাসহ একটি চোখ
 নীচের পাতার মাঝামাঝি একটি গোটাসহ একটি চোখ
চোখের পাপড়ির চারপাশে সৃষ্ট বেদনাদায়ক একটি সংক্রামণ হচ্ছে আঞ্জনি। চোখের পাতার নীচে বেদনাহীন গোটা হয়তো একটি তেলাঙ্গি হতে পারে।

ফ্লোটার্স (ছোট ছোট দাগ দেখা)

উজ্জ্বল পৃষ্ঠের দিকে (যেমন মেঝে বা আকাশ) তাকালে মাঝেমাঝে ফ্লোটার্স বা ছোট ছোট চলমান দাগ দেখা যায়। চোখ সরলে দাগগুলোও সরতে থাকে এবং ছোট মাছির মতো দেখায়। এই দাগগুলো সচরাচর দেখা যায় এবং সাধারণতঃ কোন ক্ষতি করে না।

যদি হঠাৎ করে অনেক সংখ্যক ফ্লোটার্স দেখা যায় এবং এক চোখের দৃষ্টি হানি হতে থাকে, বা আপনি আলোর ঝলকানি দেখতে থাকেন, এটি হয়তে বিছিন্ন অক্ষিপট নামের একটি অবস্থার একটি লক্ষণ হতে পারে। অক্ষিপট পুনরায় সংযুক্ত করার জন্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব চক্ষু হাসপাতালে একটি অস্ত্রোপচার করার প্রয়োজন হবে।

ভিটামিন এ ঘাটতি (রাত কানা, যেরোপথালমিয়া)

NWTND eye Page 23-1.png

ভিটামিন এ-এর অভাব একধরনের অপুষ্টি যা শিশুদের চোখের ক্ষতি করে অন্ধত্ব ঘটাতে পারে। এটি প্রতিরোধযোগ্য।

ছোট শিশুদের চোখ রক্ষা করতে তারা যেন কমলা লেবু, গাজর, আম, এবং পেপে, এবং সবুজ পাতাযুক্ত সবজি, মাছ, এবং ডিমের মতো ভিটামিন এ যুক্ত খাবার খায় তা নিশ্চিত করুন। বুকের দুধ খাওয়ানো শিশুর চোখকে ভিটামিন এ-এর ঘাটতি থেকে রক্ষা করার সাথে সাথে শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য অন্যান্য অনেক সুবিধা প্রদান করে থাকে।

যেখানে এই ধরনের অপুষ্টি সচরাচর দেখা যায় সেখানে মাঝে মাঝে সকল শিশুদেরকে প্রতি ৬ মাস পরপর ভিটামিন এ সম্পূরকখাওয়ান। vitamin A supplement]] every 6 months.

চিহ্ন

প্রথমে চোখগুলো শুকনো হয়ে ওঠে এবং কম পরিমাণে অশ্রু সৃষ্টি করে। তারপর অল্প আলোয় দেখা আরও বেশী কঠিন হয়। চোখের সাদা অংশটি এর ঔজ্জ্বল্য হারায় এবং কুচকাতে শুরু করে। পরিশেষে চোখগুলো আরও বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং শিশুটি হয়তো অন্ধ হয়েও যেতে পারে।

চিকিৎসা

যদি একটি শিশু বিকেল বেলায় ভাল করে দেখতে না পায় বা শিশুটির হাম হয়, তবে শিশুটিকে ভিটামিন এ খাওয়ান।

ট্যারা চোখ (স্ট্রাবিমাস)

যদি একটি কোলের শিশু বা একটি বাড়ন্ত শিশু সোজাভাবে না তাকায়, তবে এই অবস্থা থেকে ট্যারা চোখের দৃষ্টিহানি ঘটার সম্ভাবনা দেখা দিতে পারে। শিশুটিকে একটি চোখ বিশেষজ্ঞের কাছে নিয়ে যান। এটি কোন জরুরী অবস্থা নয়, তবে শিশুটির যত ছোট অবস্থাতে সম্ভব ডাক্তারের কাছে যাওয়া উচিত যাতে সে তার দৃষ্টি সংশোধন করার সবথেকে ভাল সুযোগ পায়।

চিকিৎসা

চোখের ডাক্তার হয়তো ট্যারা চোখটির ভালভাবে কাজ করার জন্য ভাল চোখটিকে ঢেকে দিতে পারে বা সাহায্যের জন্য বিশেষ চশমার ব্যবস্থাপত্র দিতে পারে। একটি অস্ত্রোপচার চোখটিকে সোজা করতে পারে কিন্তু বেশীরভাগ সময়েই তার প্রয়োজন হয় না।

NWTND eye Page 24-1.png
কোন কোন সময় ভাল চোখটিকে পট্টি দিয়ে বেঁধে দিলে ট্যারা চোখটি সোজা হয়ে যেতে পারে এবং তা দিয়ে আরও ভাল দেখা যেতে পারে। কোন কোন শিশুর এই পট্টিটি দিনে কয়েক ঘন্টার জন্য লাগতে পারে, এবং কোন কোন শিশুর এটি সারা দিন পরে থাকতে হতে পারে।

গর্ভধারণ ও দৃষ্টি

হরমোন পরিবর্তনের কারণে একজন নারীর দৃষ্টি পরিবর্তন হয়ে যেতে পারে, কিন্তু সাধারণতঃ সন্তান জন্মানোর পর তার দৃষ্টি আগে যা ছিল আবারও সেই অবস্থাতেই ফেরত যায়।

গর্ভবতী নারী যার দৃষ্টি হঠাৎ করেই ঝাপসা হয়ে গেছে, বিভিন্ন দাগ দেখতে পায়, এক চোখে দৃষ্টিহানি হয়েছে, বা দ্বৈত দৃষ্টি দেখা দিয়েছে তার হয়তো প্রি-একলামশিয়ার মতো একটি সঙ্কটাপূর্ণ অবস্থার বিপদ চিহ্নগুলো দেখা দিতে শুরু করেছে। প্রি-একলামশিয়ার কারণে মাথাব্যথা ও উচ্চ-রক্তচাপও (১৪০/৯০ বা তার বেশী) দেখা দেয়। ততক্ষণাৎ সাহায্য গ্রহণ করুন।

গর্ভবতী নারীদের গনোরিয়া ও ক্ল্যামেডিয়া পরীক্ষা করতে ও যদি প্রয়োজন হয় তবে চিকিৎসা গ্রহণ করতে সাহায্য করুন। নারীরা নিজেদের অজান্তেই এই দু'ধরনের অসুস্থ্যতায় আক্রান্ত হতে পারে, যা যৌন ক্রিয়ার সময় বাহিত হয়। এই জীবাণুগুলো যদি জন্মের সময় শিশুর চোখে ছড়িয়ে যায় তবে শিশুটির দৃষ্টিহানি হতে পারে।

গর্ভবতী নারীদেরকে রুবেলা ও জিকা থেকে সুরক্ষা করুন, এই অসুস্থ্যতাগুলো শিশুদের চোখের সঙ্কটজনক সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। রুবেলা (জার্মান হাম) টীকা দ্বারা রোধ করা যায়। জিকা এবং কিভাবে তা রোধ করা যায় তার উপর আরও তথ্যের জন্য মশা থেকে অসুস্থ্যতা (সংকলিত হচ্ছে) দেখুন।


এই পাতাটি হালনাগাদ করা হয়েছে: ১৮ এপ্রিল ২০২৪