Hesperian Health Guides

চোখে ও দেখায় সমস্যা

এই অধ্যায়ে

চোখের মৌলিক পরিচর্যা

মুখমণ্ডল ও চোখের চারপাশের এলাকা পরিষ্কার রাখলে ও অতিরিক্ত রোদ, বাতাস ও জখম হওয়া থেকে রক্ষা করলে অনেক সাধারণ সমস্যা যেগুলো চোখের ক্ষতি করে ও চোখের জ্বালা করা, লাল হয়ে যাওয়া, বা চোখে ব্যথা করার কারণ ঘটায় সেগুলো রোধ করা যায়। পুষ্টিকর খাবার খাওয়াও চোখের অনেক সমস্যা রোধ করে।

জখমের কারণে দৃষ্টি হানি হতে পারে বা অন্ধত্ব সৃষ্টি হতে পারে। দ্রুত ব্যবস্থা নিন: গুরুতর চোখের জখম বা বিপদের লক্ষণ দেখা দিলে নিকটস্থ হাসপাতাল বা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে যান। তারা আপনার প্রয়োজনে একজন চোখ বিশেষজ্ঞ খোঁজায় আপনাকে সাহায্য করতে পারে।

দূরের বা খুব কাছের বস্তুগুলো দেখায় সমস্যা হলে সঠিক ধরনের চশমা ব্যবহার করলে প্রায় ক্ষেত্রেই ভাল করে দেখায় সাহায্য হয়। যেহেতু সময়ের আবর্তে দৃষ্টি পরিবর্তন হয় সেহেতু আপনার হয়তো প্রায়ই নতুন চশমার প্রয়োজন হবে।

প্রাপ্তবয়ষ্কদের জন্য, ছানি এবং গ্লুকোমা হলো দৃষ্টিহানি হবার সাধারণ কারণ যা থেকে অন্ধত্বের সৃষ্টি হতে পারে। চিকিৎসা করলে দৃষ্টিশক্তি ফিরে পাওয়া বা অবস্থার আরও অবনতি হওয়া বন্ধ করায় সাহায্য করতে পারে। চোখ ও এর অংশবিশেষ সম্পর্কে জানলে চোখকে সুস্থ্য রাখতে ও চোখের সমস্যাগুলোর যত্ন নিতে সাহায্য করবে।


চোখের বিভিন্ন অংশ

 চোখের বিভিন্ন অংশ
অশ্রু গ্রন্থি থেকে অশ্রু তৈরী হয়
চোখের পাপড়ী
চোখের মণি হলো কালো অংশটি
কনীনিকা হলো রঙ্গিন অংশটি
চোখের পাতা
অশ্রু গ্রন্থি হলো একটি নল যা থেকে অশ্রু নাকে যায়
কর্নিয়া হলো পরিষ্কার (স্বচ্ছ) স্তর যা চোখের কনীনিকা ও মণি ঢেকে রাখে
কর্নিয়ার স্বচ্ছ পাতলা আচ্ছাদন হোল একটি পাতলা স্তর যা চোখের সাদা অংশটিকে ঢেকে রাখে
লেন্স হলো গোলাকার স্বচ্ছ একটি অংশ যা চোখের ভিতরে থাকে এবং কোন কিছু দেখতে পাওয়ার জন্য আলোর প্রতিসরণ করার কাজে এর প্রয়োজন হয়
NWTND eye Page 2-1.png

যখন চোখ সুস্থ্য থাকে তখন:

  • চোখের পাতা সহজেই খোলে ও বন্ধ হয় এবং চোখের পাপড়ি বাইরের দিকে বাঁকা হয়ে থাকে, চোখের দিকে নয়।
  • চোখের সাদা অংশটি পুরোটাই সাদা, মসৃণ, এবং আদ্র।
  • চোখের কনীনিকা ও মণি ঢেকে রাখা কর্নিয়াটি উজ্জ্বল, মসৃণ এবং স্বচ্ছ।
  • মণিটি কালো ও গোলাকার। কালো অংশটি বেশী বা কম আলোর ক্ষেত্রে প্রতিক্রিয়া করে ছোট বা বড় হয়।
 একজন ব্যক্তি সাবান দিয়ে হাত ধুচ্ছে

চোখ দু'টি পরিষ্কার রাখুন

অনেক ধরনের চোখের সমস্যা রোধ করতে ঘনঘন আপনার মুখ পরিষ্কার করুন। এর ফলে ধুলোবালি এবং জীবাণু আপনার চোখে গিয়ে সহজে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারবে না।

আপনার মুখ ধোবার জন্য আপনার প্রচুর পরিমাণে জল প্রয়োজন নেই। আপনি একটি পরিষ্কার প্লাষ্টিকের বোতল বা পাত্র থেকে একটি টিপি-ট্যাপ তৈরী করতে পারেন)। কাপড় বা তোয়ালে শেয়ার করার মাধ্যমে সৃষ্ট সংক্রামণ এড়াতে বাতাসে আপনার মুখ শুকান।

 একজন নারী একটি শিশুর চোখ কাপড় দিয়ে মুখে দিচ্ছে

চোখ সংক্রমিত হলে এগুলোকে ঘনঘন একটি পরিষ্কার কাপড় ও পরিষ্কার জল দ্বারা পরিষ্কার করুন। ধীরে ধীরে নাকের কাছে চোখের কোণা থেকে শুরু করে কানের দিকের চোখের কোণা বরাবর মুছুন। প্রতিটি চোখ মোছার জন্য কাপড়টির ভিন্ন অংশ ব্যবহার করুন এবং তারপর ভালভাবে কাপড়টিকে ধুয়ে পুনরায় ব্যবহারের আগে ভালভাবে শুকিয়ে নিন।

সংক্রামণ ছড়ানো রোধ করতে সংক্রামিত চোখ পরিষ্কার করার আগে ও পরে ভালকরে আপনার হাত সাবান দিয়ে ধুয়ে নিন।

কিভাবে চোখ থেকে ধুলা বা চোখের পাপড়ি সরাতে হয়

 একটি শিশু কাপড় দিয়ে তার চোখ মুছছে
চোখের পাতার ভিতরে কোন কিছু আটকে গেলে তা চোখের উপর আঁচড় কাটতে পারে বা ঘষা লাগাতে পারে, তাই আপনার চোখ ঘষবেন না। চোখের জল সেটিকে বের করতে সাহায্য করতে পারে।

ব্যক্তিটিকে তার চোখ বন্ধ করে এক পাশ থেকে অন্য পাশে, এবং উপর থেকে নীচে চারিদিকে ঘুরাতে দিন। তারপর আপনি যখন তার চোখ খুলে ধরবেন তখন তাকে আবারও উপর নীচে তাকাতে বলুন। এর ফলে চোখে জলের ‍উৎপন্ন হয় এবং তা ময়লা ধুয়ে বের করতে সাহায্য করে। চোখের জল উৎপন্ন করার আরও একটি উপায় হলো ভাল চোখটিকে ধীরে ধীরে ঘষা। এর ফলে দু'চোখেই জল উৎপন্ন হয়। লাল হয়ে যাওয়া চোখটিকে ঘষবেন না।

অথবা আপনি চোখের ভিতরে যাওয়া ধুলিকণা বা চোখের পাপড়ি পরিষ্কার জল দিয়ে বের করার চেষ্টা করতে পারেন। শুধুমাত্র পরিষ্কার জল ব্যবহার করুন, অন্য কোন তরল ব্যবহার করবেন না। আপনার চোখ খুলে ধরে তারপর একটি পাত্র থেকে চোখে জল দিন (অথবা একটি সূঁচবিহীন সিরিঞ্জের মাধ্যমে পিচকারির মতো করে ধীরে ধীরে জল দিন)। ব্যক্তিটি শুয়ে থাকতে পারে বা তার মাথা পিছনে কাত করে রাখতে পারে যাতে আপনি যখন জল ঢালবেন তখন যেন তা ভিতরের দিক (নাকের কাছাকাছি) থেকে চোখের বাইরের দিকে (কানের কাছাকাছি) বেয়ে যেতে পারে।

আপনি যদি ধুলিকণা দেখতে পান তবে এটিকে একটি ভিজা, পরিষ্কার কাপড়, টিসু বা প্লাষ্টিকের কাঠির মাথায় লাগানো তূলার সাহায্য ধীরে ধীরে সরিয়ে ফেলুন।

ধুলিকণা যদি চোখের উপরের পাতার নীচে থাকে তবে আপনি হয়তো এটিকে একটি প্লাষ্টিকের কাঠির মাথায় লাগানো তূলার উপরে উল্টে ধরেই শুধুমাত্র দেখতে পাবেন। আপনি এটি করার সময় ব্যক্তিটিকে নীচের দিকে তাকিয়ে থাকতে বলুন।

 কিভাবে উপরের পাতাটিকে উল্টাতে হবে
একটি পরিষ্কার কাপড়ের কোণা, টিস্যু, বা প্লাষ্টিকের কাঠির মাথায় লাগানো তূলার সাহায্যে চোখের পাপড়ি বা ধুলিকণা পরিষ্কার করুন। সবসময়েই ময়লাটিকে চোখের থেকে দূরে সরিয়ে দিন।

আপনি যদি সহজেই ধুলিকণাটিকে বের করতে না পারেন, তবে যেখানে জ্বালা অনুভূত হচ্ছে সেখানে সামান্য পরিমাণে জীবাণুরোধক চোখের মলম লাগিয়ে দিন, চোখটিকে রক্ষা করুন , এবং ব্যক্তিটিকে চিকিৎসা সহায়তার জন্য পাঠান।

কর্মস্থলের বিপদ, দূষণ, এবং সূর্য্য চোখের ক্ষতি করে

রাসায়নিক দ্রব্য, বায়ু এবং জল দূষণ, এবং সূর্য্যালোকের শক্তিশালী রশ্মি (আল্টাভায়োলেট বা ইউভি রশ্মি বলা হয়) চোখে জ্বালা ধরাতে এবং সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। ঘরে বা কাজের জায়গায়, অনেক কিছু দ্বারাই চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, বা রাসায়নিক দ্বারা পুড়ে যেতে পারে।

  • রান্না: রান্নার আগুন এবং চুলা থেকে সৃষ্ট ধোঁয়া চোখে জ্বালা ধরাতে ও শুকনো করে ফেলতে পারে। এগুলো নারী ও শিশুদেরকে সবথেকে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত করে।
  • বায়ু দূষণ: বায়ুতে থাকা ধুলা ও রাসায়নিক পদার্থ বিশেষকরে শিশুসহ সকল ব্যক্তি যারা বাইরে কাজ করে বা খেলে তাদের চোখের ক্ষতি করে।
  • জল দূষণ: কারখানা বা খনি থেকে রাসায়নিক পদার্থ, কীটনাশক, এবং নর্দমার ময়লা নদী বা হ্রদে গিয়ে মেশে, ও যারা সেখানে স্নান করে বা কাপড় ধোয় তাদের চোখে ও ত্বকে জ্বালা ধরায়।
  • কৃষি: যন্ত্রপাতি, ধুলা, পাথর, গাছের ডাল, বিষাক্ত গাছ, রাসায়নিক সার এবং কীটনাশক এর সবগুলোই চোখের ক্ষতি করতে পারে।
  • বাইরে: সূর্য, ধূলা, এবং বাতাসের কারণে চোখ জ্বালতে পারে।
  • চোখ রক্ষা না করে মটরসাইকেল চালানোর ফলে চোখে আঘাত লাগতে পারে।
  • রাসায়নিক দ্রব্য: কারখানার কর্মী, কৃষক, খনি শ্রমিক, পরিষ্কার কর্মী, গৃহ কর্মী এবং অন্যান্যরা রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার করে। যদি রাসায়নিক দ্রব্য চোখে যায় তবে সেগুলো খুব দ্রুত চোখ পোড়াতে পারে
  • কলকব্জা বা যন্ত্রপাতি: ধাতব বা কাঠের টুকরা ভেঙ্গে ছিটকে গিয়ে চোখে আঘাত করতে পারে, একইভাবে অতিরিক্ত তাপ, স্ফুলিঙ্গ বা আগুনের শিখাও চোখে আঘাত করতে পারে।
  • অফিস ও কারখানার কর্মীরা: একটি কাজের দিকে একনাগারে অনেক ঘন্টা ধরে মনোনিবেশ করার ফলেও চোখের উপর ধকল যায়।


নিরাপত্তা চশমা এবং কালো বা রঙিন চশমা চোখকে আঘাতের হাত থেকে রক্ষা করে
সকল ধরনের চশমাই চোখ রক্ষা করতে সাহায্য করে। যখন যন্ত্রপাতি বা শক্তিযুক্ত সরঞ্জাম ব্যবহার করবেন, মটরসাইকেল চালাবেন, বা আপনি যদি কীটনাশক বা অন্যান্য রাসায়নিক দ্রব্য নিয়ে কাজ করবেন তখন নিরাপত্তা চশমা বা নিরাপত্তা রঙিন চশমা ব্যবহার করুন।

 ভারী যন্ত্রপাতি ব্যবহার করার সময় একজন কর্মী তার চোখ ও মুখ রক্ষা করছে
NWTND eye Page 4-2.png
কার্য্যক্ষেত্রে চোখ রক্ষা করার বিষয়ে আরও জানতে হেসপেরিয়ানের শ্রমিক-কর্মীদের জন্য স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা বিষয়ে সহায়িকা দেখুন। Workers' Guide to Health and Safety.
 নারীরা টুপি পড়ে কাজ করছে
 একজন নারী কম্পিউটারে কাজ করছে

টুপি ও রোদচশমা সূর্য্যরশ্মি থেকে চোখ রক্ষা করে
ঘরের বাইরে থাকা লোকরা প্রখর সূর্য্যালোক থেকে তাদের চোখ রক্ষা করার জন্য টুপি এবং সম্ভব হলে কালো চশমা পরতে পারে। যে সমস্ত চশমা ইউভি (আল্ট্রাভায়োলট) ঠেকানোর জন্য তৈরী করা হয়েছে সেগুলো সবথেকে ভাল। সূর্য্য থেকে রক্ষার মাধ্যমে হয়তো কোন কোন ধরনের ছানি পড়ার গতিও কমিয়ে আনা যায় । এমনকি অনেক বছর অতিরিক্ত সূর্য্যালোকে থাকার পরও টুপি ও রোদচশমা ব্যবহার করে চোখের সমস্যাগুলোর আরও খারাপ হয়ে যাওয়া রোধ করা যায়।

চোখের উপর চাপ দেওয়া এড়িয়ে চলুন

চোখের উপর চাপ দেওয়া এড়িয়ে চলুন
যেখানে যথেষ্ট পরিমাণে আলো নেই এরকম জায়গায় কাজ করা, আপনার কম্পিউটার বা মোবাইল ফোনের দিকে সবসময় তাকিয়ে থাকা, বা খুব কাছের কোন কিছুর দিয়ে কয়েক ঘন্টা ধরে একনাগারে তাকিয়ে থাকলে চোখের উপর চাপ পড়ে। যথেষ্ট আলোর ব্যবস্থা করে এবং কামরার অন্য পাশে মাঝে মাঝে তাকানোর মাধ্যমে চোখের উপর চাপ পড়া কমান। বয়স্ক কর্মীদের হয়তো নিটকের সূক্ষ্ম কাজের জন্য বই পড়ার চশমা প্রয়োজন হবে ।

Bn NWTND eye Page 5-4.png
প্রথমে আপনার কাছের কোন কিছুর দিকে তাকান।
তারপর ৩ থেকে ৪ মিটার দূরে কোন কিছুর দিকে ২০ সেকেন্ডের জন্য তাকান।
প্রতি ঘন্টায় এটি বেশ কয়েকবার করুন। এছাড়াও এটি আপনার চোখ চারিদিকে ঘুরাতেও সাহায্য করে: আপনার মাথা স্থির রাখুন এবং আপনার চোখ ঘুরিয়ে উপরের দিকে এক দেয়াল থেকে ছাদের চারপাশ হয়ে অন্য দেয়ালে নীচের দিকে তাকান।

ভাল খাবারের সাহায্যে চোখের পরিচর্যা করা

 একজন নারী নোনতা, প্রক্রিয়াজাত করা খাবার ও সোডা এড়িয়ে যাচ্ছে
পুষ্টিকর খাবারের জন্য আপনার অর্থ সঞ্চয় করুন এবং লবন ও চিনি দূরে রাখুন। ভাল খাবার ভাল স্বাস্থ্য তৈরী করে অধ্যায়টিতে আপনার অল্প টাকা থাকলেও কিভাবে ভাল খাবার খেতে পারেন সে বিষয়ে অনেক ধারণা দেয়া আছে।

দেহকে স্বাস্থ্যবান থাকতে সাহায্য করে এমন অনেক খাবারই মানুষের দৃষ্টি ভাল রাখতেও সাহায্য করে। বিশেষ করে চোখের স্বাস্থ্যের জন্য ভাল খাবারগুলোর মধ্যে আছে:

  • সবজি: সবুজ শাক-পাতা, মরিচ, মটর, শিম, মিষ্টি আলু, গাজর, এবং কুমড়া
  • ফল: আম, পেপে, কমলা, আর আভোকাডো
  • মাছ, বাদাম, এবং পূর্ণ দানার শস্য


গর্ভবতী অবস্থায় পুষ্টিকর খাদ্য খাওয়ার ফলে শিশুর চোখ বিকাশে সাহায্য হয়। কোলের শিশুদেরকে বুকের দুধ খাওয়ানো এবং বাড়ন্ত শিশুদের সবুজ ও কমলা সবজি ও ফলফলাদি খাওয়া নিশ্চিত করার মাধ্যমে ভিটামিন এ স্বল্পতা হ্রাস করা যায়।

স্বাস্থ্য কর্মী ও এলাকার চোখ স্বাস্থ্য

দুঃখজনক হলেও স্বাস্থ্য কর্মী এবং স্বাস্থ্য প্রসারকদেরকে চোখের জরুরী অবস্থা নিয়ে সচরাচর কাজ করতে হয়, কিন্তু প্রতিদিন হয়তো চোখ বা দৃষ্টির সমস্যা দেখা দেয় না। স্বাস্থ্য কর্মীরা যখন চোখের সমস্যার প্রাথমিক চিহ্নগুলো চিনতে শেখে তখন তারা মানুষকে তাদের দৃষ্টির উন্নতি করতে ও তাদের দৃষ্টিহানি হওয়া থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করতে পারে।

  • আপনি যখন রোগী দেখবেন তখন লাল হয়ে যাওয়া, ফুলে ওঠা, চুলকানো, বা চোখের মধ্যে ধূসর দাগ খুঁজুন - এবং প্রতিটি চিহ্নের মানে কী ও কিভাবে এর চিকিৎসা করা যায় তাও জানুন।
  • নারীদের জন্য চোখ পরীক্ষা ও চোখের চিকিৎসা করা সহজতর করুন। তাদের কাজ ও পরিবারে তাদের ভূমিকার কারণে সহজেই চোখের সমস্যায় তাদের ভোগার সম্ভাবনা বেশী।
  • চোখের জন্য বিপজ্জনক কোন কোন গার্হস্থ্য প্রতিকার ও বানিজ্যিক উৎপাদ সম্পর্কে এবং মিথ্যা আরোগ্যের আশ্বাসে অর্থ অপচয় না করার বিষয়ে মানুষকে জানত সাহায্য করুন।
  • বিদ্যালয়গুলোতে বছরে একবার শিশুদের জন্য দৃষ্টি পরীক্ষার আয়োজন করুন এবং চোখের সমস্যা, বিশেষ করে ক্ষীণদৃষ্টির চিহ্নগুলো শিক্ষক-শিক্ষিকাদের চিনতে শিখান।
  • বৃদ্ধ লোকেদের যদি ছানির সমস্যা থাকে তবে তাদেরকে চিকিৎসার জন্য সুপারিশ করুন।
  • প্রয়োজনে ৪০ বছরের বেশী বয়েসী লোকদেরকে বই পড়বার চশমা পেতে সাহায্য করুন।
  • আপনার এলাকায় যে লোকরা দৃষ্টিহীন তাদের জন্য নিরাপদ জায়গা গড়ে তুলুন।


স্বাস্থ্য কর্মীরা যে সমস্ত কার্যক্রম ও চক্ষু হাসপাতালগুলো স্বল্প বা বিনামূল্যে চোখের সমস্যা ও জরুরী অবস্থার পরিচর্যা দিয়ে থাকে সেবিষয়ে তথ্য বিনিময় করতে পারে। এলাকাবাসীকে সংগঠিত করুন যাতে তারা অলাভজনক প্রতিষ্ঠান ও সরকার আয়োজিত অনুষ্ঠানগুলো থেকে দৃষ্টি পরীক্ষা করতে, চশমা পেতে, এবং ছানির অস্ত্রোপচার করতে পারে।

বয়স অনুসারে সাধারণ চোখের সমস্যা:
শিশুদের চোখের সংক্রামণের চিকিৎসা করতে হবে। এর কোন কোনটা শিশুদের চোখ পরিষ্কার করা ও জন্মের পরপরই চোখের মলম লাগানোর মাধ্যমে রোধ করা যায়।

বাড়ন্ত শিশুদের দৃষ্টি সমস্যা হয়তো লক্ষ্য করা কঠিন হবে। তাই ৬মাস বয়সের সময়ে পরীক্ষা করে দেখুন যে আপনি শিশুটির চোখে কোন একটি আলো বা কোন একটি খেলনা ঝুলাতে থাকলে সে সেদিকে দৃষ্টি ঘুরায় কিনা। ট্যারা চোখযুক্ত একটি শিশুকে সাহায্য করা যায় এবং ক্ষীণদৃষ্টিদেরকে চশমা দিলে সাহায্য হতে পারে। খুবই সীমিত দৃষ্টি বা দৃষ্টিহীন শিশুদের জন্য হেসপেরিয়ানের পুস্তক অন্ধ শিশুদেরকে সাহায্য করা (Helping Children Who Are Blind)-এ একজন অন্ধ শিশুকে তার দক্ষতাগুলো গড়ে তোলায় সাহায্য করতে অনেক উপায় দেখানো হয়েছে।

পরিষ্কারভাবে দেখতে পায় না এমন বিদ্যালয় যাওয়ার বয়েসী শিশুরা তাদের যে চশমা প্রয়োজন তা আপনাকে বলতে পারবে না কারণ ভাল দৃষ্টি কিরকম তা তারা নিজেরাই জানে না। যে শিশুর মাথা ব্যথা আছে, তীর্যকভাবে তাকায় বা বিদ্যালয়ে বা খেলাধূলা করায় সমস্যা অনূভব করে তাদের হয়তো দৃষ্টির সমস্যা আছে এবং তাদের চশমা প্রয়োজন হবে। বিদ্যালয়ে খেলাধূলা করা বা মারামারি করার ফলে চোখে আঘাত লাগলে কী করা উচিত তা শিখে রাখাও ভাল।

যে কোন শিশুরই চোখে আঘাত লাগতে পারে। বিভিন্ন রাসায়নিক এবং ধারালো বস্তু তালাবদ্ধ করে রাখুন এবং শিশুদের থেকে দূরে রাখুন।

প্রাপ্তবয়ষ্কদের দৃষ্টি যে কোন বয়সেই পরিবর্তীত হতে পারে এবং কোন কোন সময় চশমা সাহায্য করতে পারে। যদি কোন ব্যক্তির ডায়াবেটিস বা উচ্চ রক্তচাপ থাকে তবে এই সমস্যাগুলো সামলাতে চিকিৎসা করলে চোখের আরও ক্ষতি হওয়া থেকে রক্ষা পেতে সাহায্য করবে। ভিন্ন ধরনের কাজের কারণে চোখের কোন কোন আঘাত বা চোখের একটি নির্দিষ্ট অবস্থা সৃষ্টি হবার সম্ভাবনা বেড়ে যায়

বৃদ্ধ প্রাপ্তবয়ষ্কদের ছানি হবার সম্ভাবনা বেশী এবং তাদের rবই পড়বার চশমা প্রয়োজন হবে।

একজন মা ও তার সন্তানের সাথে একজন শিক্ষিকা কথা বলছে
চেন এখন খুব ভাল করছে কারণ সে সামনের দিকে বসছে। আমরা বুঝতেই পারিনি যে পড়াশুনা নিয়ে তার যে সমস্যা হতো তা তার চশমার প্রয়োজন ছিল বলেই হতো। আগামী সপ্তাহে সে তার প্রথম চশমা পাবে!



এই পাতাটি হালনাগাদ করা হয়েছে: ১৯ এপ্রিল ২০২৪