Hesperian Health Guides
সচরাচর ব্যবহৃত টীকা
পরিচ্ছেদসমূহ
- ১ বেশীরভাগ দেশেই নীচেরগুলোর বিরুদ্ধে সুরক্ষার জন্য টীকা পাওয়া যায়:
- ২ যেখানে প্রয়োজন সেখানে নীচেরগুলোর বিরুদ্ধে সুরক্ষার জন্য টীকা রয়েছে:
- ২.১ বিসিজি টীকা টিউবারকুলোসিস (টিবি) এর বিরুদ্ধে সুরক্ষা দেয়
- ২.২ ডিপিটি (ডিট্যাপ, টিড্যাপ বলা হয়) ডিপথেরিয়া, পারটুসিস, টিটেনাস থেকে সুরক্ষা দেয়
- ২.৩ হেপবি (এছাড়াও এইচবিভি) হেপাটাইটিস বি এর বিরুদ্ধে সুরক্ষা দেয়
- ২.৪ হিব টীকা হেমোফিলাস ইনফ্লুয়েঞ্জা টাইপ বি এর বিরুদ্ধে সুরক্ষা দেয়
- ২.৫ পোলিও টীকা (ওপিভি, আইপিভি) পোলিওর বিরুদ্ধে সুরক্ষা দেয়
- ২.৬ রোটাভাইরাসের (আরভি) টীকা রোটাভাইরাসের বিরুদ্ধে সুরক্ষা দেয়
- ২.৭ নিউমোকক্কাল (সংযুক্ত) টীকা নিউমোনিয়া ও অন্যান্য সংক্রামণের বিরুদ্ধে সুরক্ষা দেয়
- ২.৮ হাম, এমআর, এমএমআর টীকা হামের বিরুদ্ধে সুরক্ষা দেয়
- ২.৯ রুবেলা, এমআর, এমএমআর টীকা রুবেলার (জার্মান হাম) বিরুদ্ধে সুরক্ষা দেয়
- ২.১০ এইচপিভি টীকা হিউম্যান প্যাপিলোমাভাইরাস থেকে সুরক্ষা দেয়
- ৩ টীকা শুধুমাত্র কয়েকটি অঞ্চলে ব্যবহৃত হয় এবং অন্যান্য টীকা যেগুলো মাত্র নির্দিষ্ট কিছু ব্যক্তির প্রয়োজন হয়
বেশীরভাগ দেশেই নীচেরগুলোর বিরুদ্ধে সুরক্ষার জন্য টীকা পাওয়া যায়:
- টিউবারকুলোসিস (টিবি)
- টিটেনাস
- ডিপথেরিয়া
- হুপিং কাশি (পারটুসিস)
- হেপাটাইটিস বি
- হেমোফিলাস ইনফ্লুয়েঞ্জা টাইপ বি, যেটি বেশ কয়েকটি রোগের সৃষ্টি করে
- পোলিও
- রোটাভাইরাস, কোলের শিশু এবং বড় শিশুদের মধ্যে ডাইরিয়া সৃষ্টি করে
- নিউমোকক্কাস, যা নিমোনিয়ার এবং অন্যান্য সংক্রমণের সৃষ্টি করে
- হাম
- রুবেলা (জার্মান হাম)
- হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস (এইচপিভি), যা জরায়ুর ক্যান্সার সৃষ্টি করে।
যেখানে প্রয়োজন সেখানে নীচেরগুলোর বিরুদ্ধে সুরক্ষার জন্য টীকা রয়েছে:
- কলেরা
- ম্যানিনজোকক্কাল সংক্রামণ
- পীত জ্বর
- জাপানী এনসেফালাইটিস
- আঁটুলি-বাহিত এনসেফালাইটিস
- হেপাটাইটিস এ
- জল বসন্ত (ভ্যারিসেলা)
- ইনফ্লুয়েঞ্জা (ফ্লু)
- টাইফয়েড জ্বর
- জলাতঙ্ক রোগ
বিসিজি টীকা টিউবারকুলোসিস (টিবি) এর বিরুদ্ধে সুরক্ষা দেয় | |
বিসিজি একটি ইঞ্জেকশান যা ত্বকের ঠিক নীচে দেয়া হয়। এটি জন্মের পরপরই যত শীঘ্র সম্ভব দেয়া হয়।
|
টিউবারকুলোসিস (টিবি) একটি বিপজ্জনক সংক্রামণ, সাধারণতঃ ফুসফুসে হয় যেটি ঔষধ দ্বারা চিকিৎসা ও নিরাময় করা যায়। যদি চিকিৎসা করা না হয় তবে টিবি ধীরে ধীরে ফুসফুসকে ধ্বংস করে ব্যক্তির শ্বাস নেয়া রোধ করে। বিসিজি টীকা সবথেকে বিপজ্জনক ধরনের টিবি রোধ করে এবং অন্যান্য সংক্রামণ রোধ করায়ও দেহকে সাহায্য করে। |
ডিপিটি (ডিট্যাপ, টিড্যাপ বলা হয়) ডিপথেরিয়া, পারটুসিস, টিটেনাস থেকে সুরক্ষা দেয় | |
ডিপিটি টীকা ৩টি রোগ থেকে সুরক্ষা দেয়। পেন্টাভ্যালেন্ট ও হেক্সাভ্যালেন্ট টীকার মধ্যে ডিপিটি অন্তর্ভূক্ত। শিশুদের বয়স ৬মাস হওয়ার মধ্যেই তারা নির্দিষ্ট সময় পরপর ৩টি ইঞ্জেকশান পেয়ে থাকে।
|
ডিপথেরিয়া বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই শিশুদেরকে আক্রান্ত করে এবং গলাকে এতো বেশী ফুলিয়ে তুলতে পারে যে ব্যক্তিটি শ্বাস নিতে পারবে না। পারটুসিস হুপিং কাশি নামের একটি খারাপ কাশির সৃষ্টি করে, যা শ্বাস নেয়ে কঠিন করে তোলে। এটি শিশুর জন্য বিশেষভাবে বিপজ্জনক। টিটেনাস খুব দ্রুতই মারাত্মক হয়ে উঠতে পারে। যে কোন ব্যক্তি এটি একটি কাটা বা ক্ষত থেকে পেতে পারে। সদ্যজাতরা টিটেনাস পেতে পারে যদি মায়েদের টীকা দেয়া না থাকে। |
হেপবি (এছাড়াও এইচবিভি) হেপাটাইটিস বি এর বিরুদ্ধে সুরক্ষা দেয় | |
বয়স ৬মাস হবার মধ্যেই শিশুরা ক্রমান্বয়ে ৩টি বা ৪টি ইঞ্জেকশান পেয়ে থাকে।
|
হেপাটাইটিস বি সঙ্কটজনক যকৃতের সমস্যা এবং কোন কোন সময় যকৃতের ক্যান্সার সৃষ্টি করতে পারে। জন্মের সময় এটি মা থেকে শিশুতে অথবা যৌনসঙ্গমের মাধ্যমে বা অপরিষ্কার সূঁই ব্যবহারের ফলে দুই ব্যক্তির মধ্যে বাহিত হতে পরে। |
হিব টীকা হেমোফিলাস ইনফ্লুয়েঞ্জা টাইপ বি এর বিরুদ্ধে সুরক্ষা দেয় | |
৬ মাস বয়সের মধ্যে শিশুরা ইঞ্জেকশানক্রমের ৩টি পেয়ে থাকে, হয় ডিপিটিক্রমের সাথে বা পেন্টাভ্যালেন্ট বা হেক্সাভ্যালেন্ট টীকার অংশ হিসেবে।
|
হেমোফিলাস ইনফ্লুয়েঞ্জা টাইপ বি সাধারণভাবে ফ্লু বলা ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো নয়। এটি একটি জীবাণূ যা ম্যানিনজাইটিস, নিউমোনিয়া, ত্বক ও অস্থির সংক্রামণ, এবং অন্যান্য সঙ্কটজনক অসুস্থ্যতার সৃষ্টি করে। |
পোলিও টীকা (ওপিভি, আইপিভি) পোলিওর বিরুদ্ধে সুরক্ষা দেয় | |
৬ মাস বয়সের মধ্যে শিশুরা ৩ থেকে ৪টি ক্রমের মাত্রা পেয়ে থাকে।
|
পোলিও একটি ভাইরাস যার থেকে পক্ষাঘাত, শ্বাস কষ্ট হতে পারে, এবং মৃত্যুও ঘটতে পারে। যেহেতু এতো বেশী লোক এর বিরুদ্ধে টীকা গ্রহণ করেছে তাই পোলিও প্রায় নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। |
রোটাভাইরাসের (আরভি) টীকা রোটাভাইরাসের বিরুদ্ধে সুরক্ষা দেয় | |
৬ মাস বয়সের মধ্যে টীকা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানভেদে এই টীকাটি শিশুরা ২ থেকে ৩ বার পেয়ে থাকে। এটি মুখে ফোঁটা আকারে দেয়া হয়।
|
রোটাভাইরাস একটি সাধারণ রোগ যারা ফলে তীব্র ডাইরিয়া, জ্বর, এবং বমির সৃষ্টি হয়। এটি খুব সহজেই ছড়ায় এবং এটি বিশেষভাবে কোলের শিশু ও বড় শিশুদের জন্য বিপজ্জনক। |
নিউমোকক্কাল (সংযুক্ত) টীকা নিউমোনিয়া ও অন্যান্য সংক্রামণের বিরুদ্ধে সুরক্ষা দেয় | |
শিশুরা ক্রমান্বয়ে ৩টি ইঞ্জেকশান পেয়ে থাকে।
|
এই টীকা নিউমোকক্কাস জীবাণূ দ্বারা সৃষ্ট সঙ্কটজনক ফুসফুস, মস্তিষ্ক, এবং রক্তের সংক্রামণ রোধ করে। সকল শিশুকেই টীকা দেয়া অগ্রাধিকার, কিন্তু এটি নিউমোনিয়ার বিরুদ্ধে বয়স্ক ব্যক্তিদেরকেও সুরক্ষা দিতে সাহায্য করে। |
হাম, এমআর, এমএমআর টীকা হামের বিরুদ্ধে সুরক্ষা দেয় | |
এই টীকাটি বেশীরভাগ সময়ই সমন্বিত টীকার একটি অংশ হিসেবে দেয়া হয়, হয় এমআর (হাম এবং রুবেলা), বা এমএমআর (হাম, মাম্পস, এবং রুবেলা) হিসেবে। শিশুদের ন্যুনতম ২ মাত্রা নেয়া প্রয়োজন হবে।
|
হাম সহজেই শিশুদের মধ্যে ছড়ায় এবং ফুসকুড়ি, জ্বর এবং কাশির সৃষ্টি করে। চিকিৎসা করা না হলে এটি ডাইরিয়া, চোখ বা কানের সংক্রামণ, অন্ধত্ব, বা মৃত্যু ঘটাতে পারে। |
রুবেলা, এমআর, এমএমআর টীকা রুবেলার (জার্মান হাম) বিরুদ্ধে সুরক্ষা দেয় | |
শিশুদের কমপক্ষে ১টি ইঞ্জেকশান প্রয়োজন। প্রথম হামের টীকার সাথে দিন।
|
রুবেলা ফুসকুড়ি ও জ্বর সৃষ্টি করতে পারে এবং তা পরে চলেও যাবে। কিন্তু একজন গর্ভবতী নারী যদি রুবেলা আক্রান্ত হয় তবে তার গর্ভে থাকা শিশুর জন্য এটি খুবই বিপজ্জনক হবে। সকল শিশুকে টীকা দেয়া হলে রুবেলা হওয়া রোধ করা যায় এবং গর্ভবতী নারীদের এটিতে আক্রান্ত না হওয়ায় ক্ষেত্রে সাহায্য হয়। এছাড়াও যে মেয়েরা টীকা নিয়েছে তারা প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে গর্ভবতী হলে রুবেলায় আক্রান্ত হবে না। |
এইচপিভি টীকা হিউম্যান প্যাপিলোমাভাইরাস থেকে সুরক্ষা দেয় | |
মেয়েরা তাদের বয়সের উপর নির্ভর করে ২ থেকে ৩টি ইঞ্জেকশান পেয়ে থাকে।
|
এই টীকাটি নারীর জরায়ুর ক্যান্সার ও পুরুষদের কোন কোন ক্যান্সার রোধে সাহায্য করে। মেয়েদের জন্য এটি খুবই গরুত্বপূর্ণ, কিন্তু যদি বাজেট ও সরবরাহ অনুমোদন করে তবে কোন কোন দেশ ছেলেদেরকেও এই টীকা নিতে সাহায্য করে। |
টীকা শুধুমাত্র কয়েকটি অঞ্চলে ব্যবহৃত হয় এবং অন্যান্য টীকা যেগুলো মাত্র নির্দিষ্ট কিছু ব্যক্তির প্রয়োজন হয়
কলেরা
কলেরা একটি ডাইরিয়া জাতীয় রোগ যা জলশূন্যতার মাধ্যমে খুব দ্রুতই মানুষ মেরে ফেলতে পারে, বিশেষ করে কোলের শিশু ও বড় শিশুদের।
কলেরার বিরুদ্ধে টীকা মুখে খাওয়ার মাধ্যমে নেয়া হয় এবং যেখানে প্রাদুর্ভাব শুরু হয়েছে বা শুরু হতে পারে বিশেষভাবে বিভিন্ন শিবির বা বসতি এলাকা যেখানে শরণার্থী বা বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিরা থাকে সেখানে এগুলো ব্যবহার করা হয়। টীকা উৎপাদনকারী ভেদে হয় ২ বা ৩ মাত্রা প্রয়োজন হবে। কোন এলাকায় যদি কলেরা আবারও ফিরে আসে তবে লোকেদের আবারও টীকার সম্পূর্ণ ক্রমগুলো নেয়া প্রয়োজন হবে বা শুধুমাত্র একটি শক্তিবৃদ্ধিকারী মাত্রা নিতে হবে।
গর্ভবতী এবং বুকের দুধ পান করানো নারী এবং এইচআইভিযুক্ত ব্যক্তিদেরকে কলেরা টীকার প্রচারণায় অন্তর্ভূক্ত করা উচিত।
ম্যানিনজোকক্কাল সংক্রামণ
এই টীকা উত্তর ও মধ্য আফ্রিকার একটি খুবই সঙ্কটজনক ম্যানিনজাইটিস মস্তিষ্কের সংক্রামণ থেকে রক্ষা করে। টীকাটি শিশু ও প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য। রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিলে স্বাস্থ্য কর্মীদের এটির প্রয়োজন হবে। গর্ভবতী নারীদের জন্য এটি নিরাপদ। টীকা উৎপাদনকারী ভেদে হয় ১টি বা ২টি মাত্রা প্রয়োজন হবে। ভিন্ন ভিন্ন অঞ্চলে অবস্থিত ম্যানিনজোকক্কাল জীবাণূর ধরন অনুযায়ী অঞ্চলগুলো এই টীকার ভিন্ন ভিন্ন সংস্করণগুলো ব্যবহার করে।
পীত জ্বর
পীত জ্বর মশাবাহিত একটি ভাইরাস। পীত জ্বর যখন কোন নতুন এলাকায় আসে তখন এটি খুব দ্রুত ছড়ায় এবং বিশেষভাবে ছোট শিশুদের জন্য খুবই বিপজ্জনক।
যেখানে পীত জ্বর সচরাচর দেখা যায়, সেখানে শিশুদেরকে ৯ থেকে ১২ মাস বয়সের সময় হামের টীকার সাথে সাথে ১ মাত্রার পীত জ্বরের টীকা দিন। একটি নতুন অঞ্চলে পীত জ্বর দেখা দিলে ৬মাসের বেশী বয়সের শিশুদেরসহ সকলকে টীকা দিন।
জাপানী এনসেফালাইটিস
জাপানী এলসেফালাইটিস এশিয়ার বিভিন্ন অংশে মশাবাহিত ও মশার মাধ্যমে ছড়ানো একটি ভাইরাস। টীকা দান কর্মসূচীতে হয়তো প্রথমেই ১৫ বছরের শিশুদেরকে আওতায় আনা হবে। তারপর শুধু নতুন শিশুদেরকে টীকা দেবার প্রয়োজন হবে। টীকা উৎপাদনকারী ভেদে শিশুদের ১ বা ২টি ইঞ্জেকশান নেয়ার প্রয়োজন হবে।
আঁটুলি-বাহিত এনসেফালাইটিস
এই এনসেফালাইটিস আঁটুলিবাহিত, আঁটুলি একধরনের ক্ষুদ্র কীট যা ত্বকের মধ্যে বাসা বাঁধে আর এদেরকে দেখা খুব কঠিন।
শিশুদের সাধারণতঃ ৩টি ইঞ্জেকশান প্রয়োজন হয়, টীকার ধরন ও উৎপাদনকারীর উপর নির্ভর করে প্রথমটি ১ বা ৩ বছর বয়সের সময়, ২য়টি ১ থেকে ৭ মাস পর, এবং ৩য়টি ২য়টির ৯ থেকে ১২ মাস পর নিতে হয়। যেহেতু এই অসুস্থ্যতা বয়স্ক ব্যক্তিদের জন্য বিশেষভাবে বিপজ্জনক, সেহেতু টিকা কর্মসূচী হয়তো পঞ্চাশোর্ধো ব্যক্তিদের উপর প্রাধান্য দিতে পারে।
হেপাটাইটিস এ
দূষিত খাবার বা জলের মাধ্যমে হেপাটাইটিস এ ছড়াতে পারে এবং তা যকৃতের ক্ষতি করতে পারে। এর ফলে প্রচুর ক্লান্তি লাগে, কখনও কখনও মাসের পর মাস। এটি নিজে নিজেই চলে যায় এবং আর কখনওই ফেরত আসে না। যেখানে হেপাটাইটিস এ সচরাচর দেখা যায়, সেখানে টীকার প্রয়োজন নেই, কিন্তু যেখানে বেশীরভাগ লোকেরই কখনও এই অসুস্থ্যতা হয়নি তাদের ক্ষেত্রে এই টীকা এই অসুস্থ্যতা হওয়া রোধ করতে পারে।
উৎপাদনকারী ভেদে হয় ১টি বা ২টি মাত্রার টীকা দেয়া হয়। যখন নিয়মিতভাবে শিশুদের দেয়া হয় তখন প্রথম ইঞ্জেকশানটি শিশুদের ১২মাসের সময় দেয়া হয়, এবং দ্বিতীয়টি ৬ থেকে ১৮ মাস পর।
জলবসন্ত (ভ্যারিসেলা)
এই টীকা জলবসন্ত রোধ করে, এটি এমন একটি রোগ যা প্রথম ১ বা ২ সপ্তাহে জ্বর ফুসকুড়ি, চুলকানি, এবং ক্লান্তির সৃষ্টি করে। উৎপাদনকারী ভেদে প্রতিটি শিশুকে ১টি বা ২টি ইঞ্জেকশান দেয়া হয়, কখনও কখনও বড় শিশু ও প্রাপ্তবয়স্কদেরকেও এটি দেয়া হয়।
ইনফ্লুয়েঞ্জা (ফ্লু)
ইনফ্লুয়েঞ্জা (ফ্লু) হলো একদল ভাইরাসের নাম যেগুলো প্রতি বছর কয়েক মাসের জন্য ছড়ায় আর জ্বর, কাঁপুনি, এবং সাধারণ ঠাণ্ডা লাগার লক্ষণগুলোর মতোই কিন্তু আরও বেশী সঙ্কটজনক অন্যান্য লক্ষণের সৃষ্টি করে। বেশীরভাগ লোকই ফ্লু থেকে নিরাময় হয়, কিন্তু এটি শিশু, বৃদ্ধ-বৃদ্ধা, এবং স্বাস্থ্য সমস্যাযুক্ত ব্যক্তিদের জন্য সঙ্কটজনক হতে পারে। পরিবর্তনশীল এই ফ্লু ভাইরাসের বিরুদ্ধে সুরক্ষার জন্য প্রতি বছর একটি করে নতুন টীকা সৃষ্টি করা হয়। গর্ভবতী নারীদেরকে টীকা দান করা প্রায়শই প্রাধান্য পায় কারণ তাদের মাধ্যমেই গর্ভে বেড়ে ওঠা শিশুটি সুরক্ষা পেয়ে থাকে, যেহেতু তাদের বয়স ৬মাস হওয়া না পর্যন্ত তাদেরকে টীকা দেয়া যাবে না।
সাধারণতঃ প্রতিবছর একটি ইঞ্জেকশান দেয়া হয়। প্রথমবার টীকার দেবার সময় ৬মাস থেকে ৫বছরের শিশুদেরকে ৪মাসের ব্যবধানে ২টি করে ইঞ্জেকশান দেয়া হয়।
টাইফয়েড জ্বর
টাইফয়েড একটি সংক্রামণ যা জ্বর, বমি এবং অন্যান্য লক্ষণের সৃষ্টি করে। এটিকে জীবাণূনাশক দ্বারা চিকিৎসা করা যায়। খাবার বা জলের মাধ্যমে ব্যক্তি থেকে ব্যক্তিতে টাইফয়েড ছড়ায়। হাত ধোয়া এবং পরিষ্কার জল ও পয়ঃপ্রণালীতে প্রবেশগম্যতার মাধ্যমে এটি ছড়ানো রোধ করা যায়। টাইফয়েডের বিরুদ্ধে সুরক্ষার টীকা ২ আকারে পাওয়া যায়: ইঞ্জেকশান বা বড়ি। এই টীকা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই টাইফয়েডের প্রাদুর্ভাব দেখা দিলে ব্যবহার করা হয় এবং যারা টাইফয়েড সচরাচর হয়ে থাকে এমন জায়গায় যাতায়াত করে তাদের জন্য ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
জলাতঙ্ক
জলাতঙ্ক একটি মারাত্মক ভাইরাস যা প্রাণীবাহিত হয়, সাধারণতঃ কুকুর বা বাঁদুরবাহিত। কোন কোন দেশে জলাতঙ্ক রোগ কদাচিত দেখা যায় আর অন্য দেশে প্রায়ই দেখা যায়। সকল কুকুরকে জলতঙ্কের টীকা দিলে তা মানুষদের মধ্যে হবার ঝুঁকি কমায়। যদি জলাতঙ্ক আক্রান্ত কোন প্রাণী মানুষকে কামড়ায় তবে তাকে ততক্ষণাৎ জলাতঙ্ক টীকার ক্রম নেবার প্রয়োজন হবে এবং তাদের হয়তো জলাতঙ্ক ইম্মিউনোগ্লোবালিন আরও একটি ইঞ্জেকশান নেবার প্রয়োজন হবে। কমপক্ষে ১৫ মিনিট সাবান ও জল দিয়ে কামড়ের জায়গাটি ভালভাবে ধোয়া গুরুত্বপূর্ণ।
একটি প্রাণীর কামড়ের পর জলাতঙ্কের টীকা নেয়া: ব্যক্তিটির যখন জলাতঙ্ক ইম্মিউনোগ্লোবালিন এবং জলাতঙ্ক টীকা উভয়ই নেয়া প্রয়োজন হয়। কামড়ের দিন সম্পূর্ণ শিশির টীকা (উৎপাদনকারীর উপর নির্ভর করে হয় ০.৫মিলি বা ১মিলি) ব্যক্তির উপর বাহুর পেশীতে প্রবিষ্ট করুন, এবং তারপর আবার ৩য় এবং ৭ম দিনে একই কাজ করুন। তারপর ৪র্থ ইঞ্জেকশানটি কামড়ের পর ১৪দিন (২ সপ্তাহ) ও ২৮দিনের (৪ সপ্তাহ) মধ্যে দেয়া হয়। দু'ই বছর বা তার থেকে ছোট শিশুর জন্য ইঞ্জেকশানটি উপরের উরুতে দেয়া হয়। জলাতঙ্কের টীকা পেছনে দিবেন না।
জলাতঙ্কের ইম্মিউনোগ্লোবালিন যদি পাওয়া নাও যায় তবে ততক্ষণাৎ কামড়ের জায়গায় ত্বক ভালভাবে ধোয়ার মাধ্যমে এবং জলাতঙ্ক রোগের টীকার ক্রম দেয়ার মাধ্যমে জলাতঙ্ক রোধ করা যায়।
একজন ব্যক্তি কুকুরের কামড় খাওয়ার আগে জলাতঙ্ক রোগের টীকা দিয়ে জলাতঙ্ক হওয়া রোধ করা হয় কিন্তু এটি সাধারণতঃ যারা সরসরি প্রাণীদের নিয়ে কাজ করে যাদের জলাতঙ্ক হবার সম্ভবনা আছে শুধুমাত্র তাদের জন্য প্রয়োজন হয়।